এই উপন্যাসটি আমার অত্যন্ত প্রিয় একটি উপন্যাস। বছর ২ আগেও যখন কেউ আমায় জিজ্ঞেস করতো, আমার প্রিয় উপন্যাস কোনটি? আমি কিছু চিন্তা ভাবনা না করেই বলে দিতাম ‘প্রাইড এন্ড প্রেজুডিস’। কিন্তু এই উপন্যাসের লেখিকা ‘জেন অস্টিন’ যে একজন নারী আমি তা জানতামই না। মাস ৬ আগে ‘হিস্ট্রি অব ইংলিশ লিটারেচার’ পড়তে গিয়ে দেখি তিনি পুরুষ নন!
জেন অস্টিনের সব লেখাই অষ্টাদশ দশকের মধ্যবিত্ত ইংরেজ সমাজ কেন্দ্রিক। তার লেখার তিনি সবসময় সে সময়কার মধ্যবিত্ত শ্রেণী ও উচ্চবিত্ত সমাজের মানুষের মধ্যে চিন্তা,ভাবনা কিংবা রূচিগত যে একটা বিস্তর ফারাক রয়েছে তা তুলে ধরেছেন।
উপন্যাসের প্রধান দুই চরিত্র ফিথসউইলিয়াম ডার্সি ও এলিজাবেথ বেনেট। ডার্সি হলেন ধনী জমিদার পিতার শিক্ষিত এবং একমাত্র পুত্র। পিতার মৃত্যুর পর তিনি বর্তমানে সম্পূর্ণ জমিদারির মালিক। ডার্সি অহংকারী হলেও অমিতব্যয়ী নয়। সে অসচ্ছল ও সংকীর্ণমনা। তাকে যেন শেখানোই হয়েছে সাধারণ মানুষকে ঘৃণা করতে হবে।
অপরদিকে এলিজাবেথ বেনেট পরিবারের এক ব্যতিক্রম। সে অসচ্ছল অভিজাত ঘরের বুদ্ধিমতী মেয়ে। পিতার দুর্বল শাসনের সুযোগ নিয়ে পরিবারের ছোট মেয়ে গুলো হয়ে উঠেছে বেপোয়ারা, যা এলিজাবেথকে সব সময়ই পীড়া দেয়। সে সব কিছু সহজে গ্রহণ করতে চায় না।
ডার্সির প্রতি প্রথম তার যে প্রেজুডিস বা বদ্ধ ধারণা ছিল, তা পরে সে তা পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়। ডার্সির এক সময় যে প্রাইড বা অহংকার ছিল, এলিজাবেথের সংস্পর্শে এসে সেও তা পরিত্যাগ করে। ডার্সির প্রাইড আর এলিজাবেথের প্রেজুডিসই মূলত উপন্যাসটির নামকরণের বিষয়।