You are currently viewing মধ্যযুগের নারী নির্যাতন

মধ্যযুগের নারী নির্যাতন

মধ্যযুগ ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার সময়গুলোর একটি। সাধারণ মানুষের জন্য এই যুগটি ছিল অবিচারে পূর্ণ। এই যুগে মানুষ মানুষের উপর অনেকভাবে নিষ্ঠুর নির্যাতন চালাতো। বিশেষ করে নারীরা এসব নির্যাতনের শিকার হতো বেশি।

এই সময়টায় অনেক গুলো শাস্তি দেয়ার পদ্ধতি আবিষ্কার করা হয়েছিল, যেগুলো শুধু নারীদের উপরেই প্রয়োগ করা হতো।

আসুন মানব ইতিহাসে নারীদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে জঘন্য এবং নিষ্ঠুর শাস্তির সম্পর্কে অন্বেষণ করি।

হাত বন্ধনী

Source: Buzzfeed



এটি ছিলো মধ্যযুগের মহিলাদের শাস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সাধারণভাবে ব্যবহৃত নির্যাতনের যন্ত্রগুলির মধ্যে একটি। এটির ব্যবহার প্রথম শুরু হয়েছিল চীনা রাজবংশ গুলোতে, এটি ১৯ শতক পর্যন্ত ব্যবহৃত হয়েছে।

যেসকল মহিলাকে ব্যভিচারিনী হিসেবে সন্দেহ করা হতো, তাকে নির্যাতনের জন্য এই বিশেষ সরঞ্জামে আঙ্গুল রাখতে বাধ্য করা হতো। এই যন্ত্রটি শাস্তিপ্রাপ্ত নারীর আঙুলের ডগা প্রচন্ড জোরে চেপে ধরতো।

অনেকে যন্ত্রণা সহ্য না করতে পেরে অজ্ঞান হয়ে যেতো। অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে ঠান্ডা পানি নিয়ে জ্ঞান ফিরিয়ে আনা হতো, যেনো সে কষ্ট অনুভব করে।

এটি শুধু চীন নয় মধ্যযুগীয় ইউরোপীয় দেশগুলিতেও এটি ব্যবহৃত হত (ইউরোপে এটি হ্যান্ডগ্রিপ নামে পরিচিত ছিল)। এটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছিল যা শরীরের যে কোনো অংশ কে চূর্ণ করার ক্ষমতা রাখে।

গরুর কন্ডরা বা টেন্ডন দিয়ে তৈরি চাবুক দিয়ে পেটানো হতো

Source: PiPaNews

এই চাবুকটি ব্যভিচারে দোষী কিংবা রাজাদের আদেশ অমান্য করা মহিলাদের শাস্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়োছিল।
মহিলাদের উলঙ্গ করে গরুর মাংসের টেন্ডন দিয়ে তৈরি চাবুক দিয়ে ক্রমাগত আঘাত করা হত।
এই চাবুকটি দেখতে ছোট হলেও প্রচন্ড জোরে আঘাত করতো এবং যেখানে আঘাত করতো সেখানে সারাজীবনের জন্য দাঘ থেকে যেতো।

ভার্জিন বেল্ট

Source: ScienceInfo.net

এই বেল্টগুলি ‘আয়রন আন্ডারপ্যান্ট’ হিসাবেও পরিচিত ছিল। মধ্যযুগীয় ইউরোপীয় পুরুষরা তাদের স্ত্রীদের যোনিপথে তালা দেওয়া উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতো। যখন তারা কাজের প্রয়োজনে বাড়ি থেকে দূরে যেতো।

মধ্যযুগের ইউরোপের পুরুষের কাছে নারীরা সম্পত্তি হিসেবে বিবেচিত হতো। তারা মহিলাদের কে অন্য পুরুষদের দিকে তাকাতে, দেখা করতে কিংবা যোগাযোগ করতে নিষেধ করতো।
এই ধরনের বেল্টগুলো দীর্ঘ সময়ের জন্য পরিধান করানো হতো, বিশেষ করে যখন পুরুষরা যুদ্ধের জন্য বাড়ি থেকে বের হতো।

কাঠের ঘোড়া

Source: Youtube

কাঠের ঘোড়া যা ব্যভিচারের জন্য দোষী সাব্যস্ত হওয়া যে কোনও মহিলাকে শাস্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছিল। অভিযুক্ত মহিলার শরীর থেকে কাপড় খুলে ফেলা হতো এবং তাকে কাঠের ঘোড়ার সাথে শক্ত করে বেঁধে রাখা হতো।


এই কাঠের ঘোড়াটির মাঝখানে একটি রুক্ষ কাঠের অংশ ছিল যা একটি পুরুষাঙ্গের মতো ছিল।
এই কাঠের টুকরাটি চাকার খাদের সাথে সংযুক্ত ছিল এবং এর চারপাশে কয়েকটি লোহার পেরেক ছিল। কাঠের পুরুষাঙ্গটি যোনিপথে প্রবেশ করানো এবং তারপর ঘোড়াটিকে টানার সেটি সময় যোনিপথে আছড়ে পড়ত এবং মহিলার রক্তপাত ঘটত।

বেশিরভাগ মহিলাই এই নির্যাতনে মৃত্যুবরণ করতো।আর যদি কেউ বেঁচে যেতো তাকে বাকি জীবন অক্ষম হয়ে বেঁচে থাকতে হতো।

বুকে উপর নির্যাতন

Source: The Aquarius

যেসকল নারী অবৈধ সন্তান জন্ম দেয়ার জন্য দোষী সাব্যস্ত হতো এটি সেসকল মহিলাদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল।

এই যন্ত্রটি ধারালো দানাদার বস্তু দ্বারা ডিজাইন করা হয়েছিল এবং এটিকে উত্তপ্ত করে মহিলার স্তন বিভক্ত বা কেটে ফেলা হয়েছিল বা মহিলাকে দেয়ালের সাথে বেঁধে দেওয়া হয়েছিল এবং এই যন্ত্রটি ধীরে ধীরে তার বুকে লাগিয়ে যন্ত্রনা দেয়া হতো।

ভার্জিন চেম্বার

Source: Nuremberg



এই নির্যাতনের যন্ত্রটি দেখতে কুমারী নারীর আকৃতির মতো ছিল; তাই একে আয়রন মেডেন বলা হয় এবং ভিতরের অংশটি ছিল একটি ছোট চেম্বারের মতো খালি। সামনে একটি ঢাকনা ছিল এবং ভিতরের মুখ কাঁটা দিয়ে আবৃত ছিল। চেম্বারে ১ জনের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা ছিল।

যখন বন্দীরা প্রবেশ করত তখন তারা নড়াচড়া করতে পারত না কারণ কাঁটা শরীরে ক্রমাগত আঘাত করতো।

জুডাস ক্র্যাডল

Source: Quora

স্পেনে মধ্যযুগে, ধর্মদ্রোহী আদালত প্রায়ই একটি সূক্ষ্ম, পিরামিড-আকৃতির হাতিয়ার ব্যবহার করত নারীদেরকে নির্যাতন করার জন্য।বিশেষত তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগে। এজন্য তারা শক্তভাবে বিনুনিযুক্ত দড়ি দিয়ে বন্দীদের হাত-পা বেঁধে এবং তারপর ধীরে ধীরে তাদের অনেক দিকে প্রসারিত করতে ব্যবহৃত হত এবং তাদের মলদ্বার দোলনার ক্রেস্ট দ্বারা গভীরভাবে খোঁচা হত। এবং নির্যাতিতাকে উলঙ্গ করে তাদের নগ্ন শরীর সবার সামনে উন্মোচিত করে ভোগ করতে বাধ্য করা ও হতো।

Featured image Source: Buzzfeed

Leave a Reply