প্রাচীণ যে কয়েকটি সভ্যতা নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা বা গবেষণা হয় তার মধ্যে মিশরীয় সভ্যতা অন্যতম। অনেক ইতিহাসবিদ বা গভেষক তো মিশরীয় সভ্যতায় এতোটাই মুগ্ধ হয়েছেন যে মন্তব্যই করে বসেছেন ’পৃথিবীতে আগে মিশর এসেছে তারপর ইতিহাস এসেছে’।
প্রাচীন মিশরের সম্রাট অর্থাৎ ফারাওদের জীবন সম্পর্কে কমবেশি তথ্য জানলেও। সেসময়কার জনগণ অর্থাৎ সাধারণ মানুষের জীবনযাপন কেমন ছিলো তা আমরা ক’জনই বা জানি? চলুন আজ জানার চেষ্টা করি প্রাচীন মিশরের সাধারণ মানুষের জীবন কেমন ছিলো।
প্রাচীন মিশরের সাধারণ মানুষ কারা?
একটি সামাজিক পিরামিডে প্রাচীণ মিশরের জনসংখ্যা কল্পনা করুন। পিরামিডের সবার নিচে থাকবে মিশরের ক্রীতদাস, চাকর কিংবা ভাড়াটে কৃষকরা যারা অভিজাতদের অধীনেতাদের বাড়ি, জমি কিংবা মন্দিরে কাজ করতো।
এরপরের শ্রেণির সাধারণ মানুষরা হলেন দক্ষ ও আধা-দক্ষ কারিগর, সৈনিক, নাবিক ও রাষ্ট্রীয় প্রকল্পে নিযুক্ত ব্যক্তিরা। যারা রাস্তা, বিল্ডিং, সমাধি কিংবা মন্দির তৈরির কাজ হাতে নিতেন।
এর পরের শ্রেণীতে ছিলেন শিক্ষিত পেশাজীবির মানুষরা। তাদের মধ্যে ছিলেন লেখক, হিসাবরক্ষক, ডাক্তার কিংবা মন্দিরের পুরোহিতরা।
সর্বশেষে সবার উপরে থাকেন মিশরের অভিজাত মানুষেরা। এই অভিজাতরাই মিশরের বেশিরভাগ সম্পদ নিয়ন্ত্রণ করতো। আর সেইসব অভিজাতদের প্রধান ছিলেন স্বয়ং মিশরের ফারাও। প্রাচীন মিশরে তাকে দেবতার স্থান দেওয়া হতো।
এই অভিজাত শ্রেণির মানুষদের ছাড়া বাকি সকলেই প্রাচীণ মিশরে সাধারণ মানুষ হিসেবে পরিগণিত হতেন।
পরিবার
পরিবার প্রাচীণ কাল থেকেই মানুষের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য স্থান।প্রাচীণ মিশরেও বর্তমান বা সমসাময়িক কালের মতোই পরিবার প্রথা প্রচলিত ছিল। সে সময়ে মিশরের জন্মহার ছিলো অনেক বেশি; ফলে পরিবারের জনসংখ্যাও ছিলো অনেক। এমনকি প্রাচীন মিশরের দেব দেবীরাও বিবাহিত ছিলেন। দেব দেবীদের পরিবারও ছিলো।
মিশরে তখন একজন অবিবাহিত পুরুষকে অসম্পূর্ণ মানুষ হিসেবে দেখা হতো। আর তাই স্কুলপড়ুয়া ছাত্রদের তাড়াতাড়ি বিয়ে করে বাবা হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হতো। ছেলেরা অল্প বয়সে বাবা-চাচার পদাঙ্ক অনুসরণ করে তাদের ব্যবসা বা পেশায় জড়িয়ে পড়তেন। আর মেয়েরা বাড়িতে থেকে মায়ের কাছে সাংসারিক কাজকর্ম শিখতো। কিশোর বয়সেই ছেলে মেয়েরা বিবাহ করে বাবা-মা হয়ে যেতো। আর এই প্রথা চক্রাকারে চলতেই থাকতো।
বিবাহের পর সংসারে স্বামী ও স্ত্রীর ভূমিকা ছিলো ভিন্ন। স্বামীরা পরিবারের খাবারের যোগান দিতে বাড়ির বাহিরে কাজ করতো। আর স্ত্রীরা বাড়ির মধ্যে ঘরের কাজকর্ম ও খাবার তৈরিতেই ব্যস্ত থাকতেন।
আর এজন্যই প্রাচীণ মিশরীয় শিল্পীরা মিশরের নারীদের ফ্যাকাশে চামড়ার মানুষ হিসেবে চিত্রিত করেছেন। যেহেতু তারা তাদের বেশিরভাগ সময় বাড়ির গৃহের মধ্যেই কাটাতেন। আর পুরুষদের চিত্রিত করেছেন কিছুটা কালো চামড়ার মানুষ হিসেবে; কারন তারা কড়া রোদে বাহিরে কাজ করতোক আর তাতে তাদের চামড়া পুড়ে তামাটে হয়ে যেতো।
মিশরের নারীদের সম্পর্কে প্রত্নতাত্ত্বিক বা লিখিত নথিতে খুব বেশি তথ্য পাওয়া যায় না। তবে মিশরে নারী ও পুরুষের অধিকার সমান ছিলো। কর্মক্ষেত্রে পুরুষ ও নারী সমান বেতন পেতো৷ এছাড়া সম্পত্তির উত্তরাধিকার পাওয়ার সময় তারা পুরুষের সমান ভাগ পেতো। এছাড়াও কোনো নারী চাইলে নিজের স্বামীকে ত্যাগ করে একাকী থাকার স্বাধীনতাও পেতেন। এসব বিষয়ে বলতে গেলে প্রাচীন মিশরের নারীরা বর্তমানে নারীদের থেকে বরং এগিয়েই ছিলেন।
সন্তান জন্মদান
প্রাচীন মিশরের নারীরা তাদের বিবাহিত জীবনের প্রায় পুরোটা গর্ভবতী ও সন্তানকে স্তন্যপান করিয়ে কাটিয়েছেন। একজন সন্তান জন্মদান শেষ হলে তারা আবারো গর্ভবতী হয়ে পড়তেন।
চিকিৎসা ব্যবস্থা ভালো না থাকায় অনেক নারী সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করতেন। এছাড়া মিশরীয়রা ছিলে কুসংস্কারাচ্ছন্ন। গর্ভবতী হওয়ার পর নারীরা দেবী টাওরেট ও বেসের মূর্তি, তাবিজ কিংবা মন্ত্র নিজেদের কাছে রাখতেন। তারা বিশ্বাস করতেন তাদের এই দেব দেবী তাদেরকে ও তাদের সন্তানকে অনিষ্টের হাত থেকে রক্ষা করবে।
ধনী পরিবারগুলো গর্ভবতী নারীদের জন্য ছোট্ট একটি কুটির তৈরি করতেন। সন্তান জন্ম দেওয়ার কিছু কাল পরেও তারা সেই কুটিরে অবস্থান করতেন। সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় গর্ভবতী নারী ইটের উপর বসে থাকতেন। আর ধাত্রী সেই নারীর নাভির কর্ড কাটার জন্য ধারালো ছুড়ি জাতীয় অস্ত্র ব্যবহার করতেন। পুরো ব্যবস্থাটি ছিলো অনিরাপদ। ফলে অনেক সময় মা ও সন্তান উভয়েই মারা পরতেন। যদি মা ও সন্তান বেঁচে থাকতেন তাহলে সন্তানকে বুকের দুধ পান করাতেন দীর্ঘ ৩ বছর!
বাড়ি
মিশরীয়রা তাদের শহরের ঘরবাড়িগুলো তৈরি করতো মাটির ইট দিয়ে। পাথর দিয়ে সাধারণ মানুষেরা বাড়িঘর তৈরি করতো না। পাথরগুলো তারা সংরক্ষণ করতো মন্দির কিংবা সমাধি তৈরির কাজে ব্যবহার করার জন্য। মাটির ইটের উপাদানগুলো ছিলো খুবই সস্তাও ভঙ্গুর ফলে সময়ে সাথে সাথে সেসব বাড়ি ঘর চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে।
সৌভাগ্যক্রমে প্রাচীন মিশরের Deir el-Medina গ্রামটি এখনো মোটামুটি অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। এই গ্রামে সে সময়ে মূলত তখনকার শ্রমিকরা বাস করতো। বাড়িগুলো ছিলো লম্বা ও সরু, ফলে ঘরের ভেতরটা ছিলো অন্ধকারাচ্ছন্ন। ঘরের প্রধান দর্জাটি ছিলো রাস্তায় মুখোমুখি। প্রতিটি বাড়িতে দুটি থাকার রুম একটি স্টোররোম। এবং মাটিরচুলাসহ একটি রান্নাঘর অন্তর্ভুক্ত ছিল। রান্নাঘরের ছাঁদটি ম্যাট দিয়ে ঢাকা থাকতো। ফলে রান্নাঘরে ধোঁয়া ও গন্ধের সৃষ্টি হতো না।
খাবার ও পানীয়
মিশর ছিলো খুবই উর্বর দেশ। চাষবাসের জন্য মিশর এতোটাই উর্বর ছিলো যে মিশরকে বলা হতো শস্যের ভান্ডার। সাধারণত প্রাচীন মিশরে কোনো মানুষই ক্ষুধার্ত থাকতো না। মিশরীয়দের প্রধান খাবার ছিলো রুটি। এমনকি দেবতাদের মন্দিরেও প্রতিদিন শতশত রুটি নৈবেদ্য পাওয়া যেত।
রুটি ছাড়াও সাধারণ মিশরীয়রা প্রচুর শাকসবজি ও মাছ খেতো। এছাড়াও অনেকে রুটি,মাছ,পেয়াজ,পাখি ও ডাল মিশিয়ে এক ধরনের খাবার রেসিপি তৈরি করতো। গরীব সাধারণ মানুষেরা সবসময় আমিষ খেতে না পারলেও ধনী শ্রেণির মানুষরা প্রায়ই মাংস খেতেন।
আর পানীয় ছিলো প্রাচীন মিশরের মানুষদের অন্যতম প্রিয় জিনিস। সাধারণ মানুষেরা যে পানীয় পান করতো তাকে বলা হতো মিশরীয় বিয়ার। এই পানীয়টি ছিল প্রাচীন মিশরের শ্রমিক শ্রেণির পানীয়। তারা খামির দিয়ে বার্লি গাঁজন করে এবং তা ছেঁকে বিয়ার তৈরি করতো। অনেক প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে এই বিয়ারের প্রচলিত হয় ৩১০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, তার মানে আজ থেকে ৫ হাজার বছর আগে!
আর অভিজাতদের পানীয়ের নাম ছিল শেদেহ। একটা সময় বিশ্বাস করা হতো এই মদ বা পানীয় টি সৃষ্টি করা হয়েছিল এটি ডালিম ফল থেকে সৃষ্ট, কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এটি লাল আঙ্গুর থেকে উদ্ভূত বলে মনে করা হয়। এই শেদেহ প্রাচীন মিশরের ফারাওদের অতি পছন্দের পানীয় ছিল। প্রাচীন মিশরের রাজা তুতেনখামেনের সমাধিতে এই তরল প্রচুর পরিমাণে ছিল।
মুসলমানরা মিশরের নিয়ন্ত্রণ পাওয়ার পর সেখানে এসব পানীয় পানের ব্যাপারে ধর্মীয় বিধিনিষেধ আরোপ করেন। তবে বর্তমানে এসব পানীয় এখনো টিকে আছে। বর্তমানে মিশরে অ্যালকোহল সেবনের ৫৪% ই এই মিশরীয় বিয়ার।
পোশাক ও রূপচর্চা
মিশরের অনেক সমাধির দেয়ালে আঁকা ছবিতে দেখা যায় সেসময়ে অভিজাতরা চকচকরে সাদা ও জটিল ধরনের ডিজাইনে তৈরি পোশাক পড়ে আছেন। সেই পোশাক পড়ে তারা হেঁটে যাচ্ছেন কিংবা একটি সুস্বাদু ভোজ উপভোগ করছেন। প্রত্নতাত্ত্বিকরা বলেন সেসময়ে মিশরীয় নারীরা সাদামাটা পোশাক পড়তেন। তাদের পোশাকের ডিজাইনের ধরন অনেকটা গালাবিয়া শৈলীর অনুরূপ। পুরুষদের পোশাকও অনেকটা মহিলাদের পোশাকের ডিজাইনের কাছাকাছি পর্যায়েরই ছিল।
পেশাক ছাড়া মিশরের অভিজাত থেকে সাধারণ ঘরের নারীরা রূপচর্চার ব্যাপারে ছিলেন খুবই সচেতন৷ ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে তখনকার মিশরীয় নারীদের চেহারায় নাকি বয়সের ছাপ পড়তো না, এমনকি চামড়া ও কুচকাতো না। বয়স ৫০/৬০ মাত্র কিন্তু সৌন্দর্যের পরিবর্তন আসতো না; তারা সুন্দরী থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করত।
আরো একটি চমকপ্রদ ব্যাপার হচ্ছে প্রাচীন মিশরের পুরুষ ও নারী উভয়েই মেকআপ করতো। মেকআপ নিয়ে তাদের বিশ্বাস ছিল মেকআপ করলে দেবতারা তাদের আরো সুরক্ষিত রাখবেন এবং শক্তি প্রদান করবে। মেকআপ এর জন্য নারী পুরুষ উভয়ই মাস্কারা,মেহেদী সহ আরো বিভিন্ন প্রসাধনী পণ্য ব্যাবহার করতো। তারা সেসময় এগুলো ব্যবহার করার সময় নারী পুরুষ ব্যাপারগুলো মাথায় আনতো না। তাদের উদ্দেশ্য ছিলো কেবল দেবতার সন্তুষ্টি অর্জন করে নিজের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
ধর্ম
প্রাচীন মিশরে প্রায় ২,০০০ এর বেশি দেব দেবীর পূজা করার প্রমাণ পাওয়া যায়। তবে একজন দেবতা এক জায়গায় খুব বেশি জনপ্রিয় থাকলেও আরেক জায়গার মানুষের কাছে ছিলেন একেবারেই অপরিচিত নাম। আবার অনেক সময় দেবতা ছিলেন স্বয়ং মিশরের ফারাও নিজেই!
জাদুবিদ্যা
প্রাচীন মিশরে জাদুবিদ্যার খুব প্রচলন ছিলো। মিশরিয়রা বিশ্বাস করতো এই পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছে যাদুর মাধ্যমে। আর এই পৃথিবী চলছেও যাদুর মাধ্যমে।
প্রাচীন মিশরীয়দের নিকট জাদুবিদ্যা চিকিৎসা পদ্ধতিরও একটি অংশ ছিল। তাদের চারপাশের শুষ্ক ও ধূলাময় পরিবেশে কারণে শ্বাসকষ্টের মতো বিভিন্ন ধরনের রোগ-বালাই ও শারীরিক সমস্যা লেগেই থাকতো। এসব শারীরিক সমস্যার কারণ হিসেবে তারা দায়ী করতো কোনো দেবতার অভিশাপ বা কোনো খারাপ জাদুর প্রভাবকে আর সমাধানের জন্য শরণাপন্ন হতো জাদুবিদ্যার।
এছাড়াও যাদুবিদ্যা ছিলো প্রাচীন মিশরে ন্যায় বিচার করার আইনি মাধ্যম। প্রাচীন মিশের বেশ কিছু নথিপত্র ঘেটে তেমন কিছু বিচারের ঘটনাও পাওয়া গেছে। তবে সেইসব নথিগুলো প্রায়ই ফারাও এর হারেম ষড়যন্ত্র সম্পর্কিত। সেই নথিগুলোতে মিশরের ফারাউ তৃতীয় রামেসিসের স্ত্রী ফারাউ কে হত্যার ষড়যন্ত্রের ঘটনা ও বিচারের কথা উল্লেখ আছে। ফারাউ এর স্ত্রী তাকে হত্যা করে নিজের ছেলেকে সিংহাসনে বসাতে চাইছিলেন আর তাই তিনি একজন জাদুকরের সাহায্য নিতে গিয়েছিলেন।
ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়, এবং অপরাধীদের শূলে চড়ানোর শাস্তি দেওয়া হয়। আর ফেরাউনের স্ত্রীকে তার নিজের জীবন নিজে নিতে অর্থাৎ আত্মঘাতীনি হতে বলা হয়।
মৃত্যু পরবর্তী জীবন
প্রাচীন মিশরীয়দের বিশ্বাস ছিল মৃত্যুর পর মানুষ কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করতে হবে। তাদের ধারণা ছিল তারা মৃত্যুর পর জগতে মহাপ্রভুর সাথে সাক্ষাৎ করবে। সেজন্য তাদের মৃতদেহ চমৎকারভাবে প্রস্তুত করা হয়। তারা মনে করত মৃত্যুর পর একজন মৃত ব্যক্তিকে ৪২ জন দেবতার সামনে উপস্থাপন করা হবে।সেখানে মৃত ব্যক্তির হৃদপিণ্ড পরিমাপ করা হয়। কারো হৃদপিণ্ড ভারী হলে সেই ব্যক্তিকে অত্যাচারী ও খারাপ লোক বলে মনে করা হবে। সেই সাথে তাকে সাথে সাথে দেবতারা ধ্বংস করে দেবে।
আর যার হৃদপিণ্ড হালকা হবে সে চিরস্থায়ী সুখ শান্তি লাভ করবে। এরকম ধারণার কারণেই মিশরীয়রা মৃত্যু পরবর্তী জীবনের প্রস্তুতিকে বেশ গুরুত্ব দিত। তারা আরো মনে করত মৃত্যুর পর তাদের দেহ যতদিন সংরক্ষিত থাকবে ততদিন তারা স্বর্গে বাস করবে। সেজন্যই নশ্বর দেহকে স্থায়িত্ব দেওয়ার জন্য তারা মমি তৈরি করা শুরু করে। বিশেষ প্রক্রিয়ায় মৃতদেহ সৎকারের একটি ধারা হলো মমিকরণ। কোন লাশকে মমি করার উদ্দেশ্য হলো মৃত ব্যক্তির আত্মা ও শরীর পরজনমে প্রবেশ করতে সহায়তা করা। তাদের ধারণা অনুযায়ী এর মাধ্যমে তারা পবিত্রতা অর্জন করে। প্রথমদিকে শুধু রাজাদেরকে মমি করা হতো। কারণ মিশরীয়রা মনে করত রাজারা মারা যাবার পর মৃতদের রাজা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। তবে পরবর্তীতে প্রাচীন মিশরের অভিযাত ব্যক্তিবর্গ এবং বিত্তশালী লোকদেরকেও মমি করা হয়েছে।
যাই হোক সাধারণ মানুষের জন্য মমীকরণের খরচ ছিলো খুবই ব্যায়বহুল। ফলে প্রাচীন মিশরের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষকে মমিবিহীন অবস্থায় মরুভূমিতেই সমাধিস্থ করা হয়েছিল।
তথ্যসূত্র: হিস্ট্রি এক্সট্রা, হিস্ট্রি ডট কম, উইকিপিডিয়া, হিস্ট্রি অব এনশিয়েন্ট ইজিপ্ট