You are currently viewing সাহিত্যে নোবেলজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাছাই করা ৫০ টি বিখ্যাত উক্তি

সাহিত্যে নোবেলজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাছাই করা ৫০ টি বিখ্যাত উক্তি

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (৭ মে ১৮৬১ – ৭ আগস্ট ১৯৪১; ২৫ বৈশাখ ১২৬৮ – ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে “গুরুদেব”, “কবিগুরু” ও “বিশ্বকবি” অভিধায় ভূষিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তার জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খণ্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত। এছাড়া তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি এশীয়দের মধ্যে সাহিত্যে প্রথম নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

১#

❝মানুষ প্রাণপণে প্রাণ বাঁচাতে চায় কিন্তু প্রাণ তো বাঁচে না। সেইজন্যে বাঁচাবার শখ মেটাবার জন্যে এমন কিছুকে সে খুঁজে বেড়ায় যা প্রাণের চেয়ে অনেক বেশি।❞

📖 ল্যাবরেটরি(গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

২#

❝স্ত্রীর সঙ্গে স্বামীর স্বভাবের অমিল থাকলেই মিল ভালো হয়,শুকনো মাটির সঙ্গে জলধারার মতো।❞

📖 সংষ্কার (গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৩#

এমন দুঃখ আছে যাকে ভোলার মত দুঃখ নেই।

~ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (রক্তকরবী)


৪#

“বাহিরকেই চরম করিয়া দেখিলে ভিতরকে দেখা হয় না এবং বাহিরকেও সত্যরূপে গ্রহণ করা অসম্ভব হয়।”

(যাত্রার পূর্বপত্র ~ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

৫#

গান গেয়ে তরী বেয়ে কে আসে পরে!
দেখে’ যেন মনে হয় চিনি উহারে।
~ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৬#

❝মানুষ পণ করে পণ ভাঙিয়া ফেলিয়া হাঁফ ছাড়িবার জন্য, অতএব কথা না-দেওয়াই সব চেয়ে নিরাপদ।❞

📖 হৈমন্তী (গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


৭#

❝যাহা দিলাম তাহা উজাড় করিয়াই দিলাম। এখন ফিরিয়া তাকাইতে গেলে দুঃখ পাইতে হইবে। অধিকার ছাড়িয়া দিয়া অধিকার রাখিতে যাইবার মতো এমন বিড়ম্বনা আর নাই।❞

📖 হৈমন্তী (গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


৮#

শিখা একভাবে ঘরের প্রদীপরূপে জ্বলে,
আর একভাবে আগুন ধরাই দেয়।

~ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (চোখের বালি)


৯#

❝পৃথিবীতে একদল লোক জন্মায় সেবা করাই তাহাদের ধর্ম। তাহারা আপন প্রকৃতির চরিতার্থতার জন্যই এমন অক্ষম মানুষকে চায় যে লোক নিজের ভার ষোল-আনাই তাহাদের উপর ছাড়িয়া দিতে পারে। এই সহজ সেবকেরা নিজের কাজে কোনো সুখ পায় না ; কিন্তু আর একজনকে নিশ্চিন্ত করা, তাহাকে সম্পূর্ণ আরামে রাখা, তাহাকে সকলপ্রকার সংকট হইতে বাঁচাইয়া চলা,লোকসমাজে তাহার সম্মানবৃদ্ধি করা, ইহাতেই তাহাদের পরম উৎসাহ। ইহারা যেন এক প্রকারের পুরুষ মা ; তাহাও নিজের ছেলের নহে, পরের ছেলের।❞

📖 হালদারগোষ্ঠী(গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


১০#

❝পৌরুষের পরিচয় দিতে হইলে তাহাকে কিছু-একটা করিয়া তুলিতে হয়। তাহার যে বিশেষ একটা শক্তি আছে ইহা প্রমাণ করিতে না পারিলে পুরুষের ভালোবাসা ম্লান হইয়া থাকে। আর-কিছু না’ও যদি থাকে, ধন যে একটা শক্তির নিদর্শন, ময়ূরের পুচ্ছের মতো স্ত্রীর কাছে সেই ধনের সমস্ত বর্ণচ্ছটা বিস্তার করিতে পারিলে তাহাতে মন সান্ত্বনা পায়।❞

📖 হালদারগোষ্ঠী(গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১১#

বহুদূরের অসীম আকাশ আজ বনরাজিনীলা
পৃথিবীর শিয়রের কাছে নত হয়ে পড়ল।
কানে কানে বললে, আমি তোমারই।

~ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


১২#

❝যাহার অনেক আছে সে যে অনেক দেয় বলিয়াই লোকে তাহার কাছে আনাগোনা করে তাহা নহে — সে কিছু না দিলেও মানুষের লুব্ধ কল্পনাকে তৃপ্ত করে।❞

📖 পণরক্ষা(গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


১৩#

“মৌখিক আত্মীয়তা ভারি বিশ্রী ঠেকে, কেননা, কথা সেখানে শুধু মুখ থেকে বার হচ্ছে, বুক থেকে নয়; কোলাকোলি সেও বাইরে-বাইরে ছোঁয়াছুয়ি, বুকে-বুকে লাগা একে বলতে পারা গেল না! ভারি সুন্দর লাগে যখন মানুষটির সঙ্গে মানুষের হৃদয় বাইরেটির সঙ্গে ভিতরের ভাবগুলি সুন্দর মিল নিয়ে এসে লাগে মনে।”

( সুন্দর ~ অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর)


১৪#

❝যাদের বাঁধা খাটুনি আছে খাওয়া হজম করবার জন্য তাদের উপায় খুঁজতে হয় না — যারা ঘরে বসে খায় তাদের অন্তত ছাতের উপর হন্ হন্ করে পায়চারি করা দরকার।❞

📖 পয়লা নম্বর (গল্পগুচ্ছ),✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


১৫#

❝যে ছেলে চাবা-মাত্রই পায়,চাবার পূর্বেই যার অভাবমোচন হতে থাকে ; সে নিতান্ত দুর্ভাগা। ইচ্ছা দমন করতে না শিখে কেউ কোনো কালে সুখী হতে পারে না।❞

📖 কর্মফল(গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৬#

❝ সকল নিয়মেরই ব্যতিক্রম আছে, এবং ব্যতিক্রম কখন হঠাৎ ঘটে আগে হইতে তাহা কেহই বলিতে পারে না। ❞

📖 মাল্যদান(গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


১৭#

❝প্রথম বয়সের প্রথম প্রেম অনেকগুলি ছোটোখাটো বাধার দ্বারা মধুর। লজ্জার বাধা, ঘরের লোকের বাধা, অনভিজ্ঞতার বাধা, এইগুলির অন্তরাল হইতে প্রথম পরিচয়ের যে আভাস দিতে থাকে তাহা ভোরের আলোর মতো রঙিন ; তাহা মধ্যাহ্নের মতো সুস্পষ্ট, অনাবৃত এবং বর্ণচ্ছটাবিহীন নহে।❞

📖 দর্পহরণ(গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


১৮#

❝ সামনে একটা পাথর পড়লে যে লোক ঘুরে না গিয়ে সেটা ডিঙিয়ে পথ সংক্ষেপ করতে চায়, বিলম্ব তারই অদৃষ্টে আছে। ❞

📖 কর্মফল(গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


১৯#

❝নিজের স্ত্রীর সঙ্গে বীরত্ব করে লাভ কী।আঘাত করলেও কষ্ট, আঘাত পেলেও কষ্ট। তার চেয়ে তর্কের বেলায় গৃহিণীর মতকে সম্পূর্ণ অকাট্য ব’লে স্বীকার ক’রে কাজের বেলায় নিজের মত চালানোই সৎপরামর্শ —— গোঁয়ার্তুমি করতে গেলেই মুশকিল বাধে।❞

📖 কর্মফল(গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


২০#

” যাকে বাধা মেনে চলতে হবে সে যদি বুদ্ধিকে মেনে চলতে চায় ,তাহলে ঠোকর খেয়ে খেয়ে তার কপাল ফাটবেই। “

( স্ত্রীর পত্র – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর )

২১#

❝যাহাদের হৃৎপিণ্ড বরফের পিন্ড, যাহাদের বুকের মধ্যে ভালোবাসার জ্বালাযন্ত্রণা স্থান পায় না,তাহারা বোধ করি সুদীর্ঘকাল তাজা থাকে,তাহারা কৃপণের মতো অন্তরে বাহিরে আপনাকে জমাইয়া রাখিতে পারে।❞

📖 মণিহারা (গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


২২#

❝অঙ্গের মধ্যে কটিদেশ বলিয়া একটা ব্যাপার আছে তাহা কোমরে ব্যথা না হইলে মনে পড়ে না ; গৃহের আশ্রয়স্বরুপে স্ত্রী যে একজন আছে ভালোবাসার তাড়নায় তাহা পদে পদে এবং তাহা চব্বিশ ঘণ্টা অনুভব করার নাম ঘরকরনার কোমরে ব্যথা। নিরতিশয় পাতিব্রত্যটা স্ত্রীর পক্ষে গৌরবের বিষয় কিন্তু পতির পক্ষে আরামের নহে।❞

📖 মণিহারা(গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


২৩#


❝যাহার যা প্রবৃত্তি এবং ক্ষমতা সেটার চর্চা না করিলে সে সুখী হয় না। শিঙে শান দিবার জন্য হরিণ শক্ত গাছের গুঁড়ি খোঁজে, কলাগাছে তাহার শিং ঘষিবার সুখ হয় না। নরনারীর ভেদ হইয়া অবধি স্ত্রীলোক দুরন্ত পুরুষকে নানা কৌশলে ভুলাইয়া বশ করিবার বিদ্যা চর্চা করিয়া আসিতেছে। যে স্বামী আপনি বশ হইয়া থাকে তাহার স্ত্রী – বেচারা একেবারেই বেকার,সে তাহার মাতামহীদের নিকট হইতে শতলক্ষ বৎসরের শান-দেওয়া যে উজ্জ্বল বরুনাস্ত্র,অগ্নিবাণ ও নাগপাশবন্ধনগুলি পাইয়াছিল তাহা সমস্ত নিষ্ফল হইয়া যায়।❞

📖 মণিহারা(গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


২৪#


” দায়িত্ব হাতে না পেলে দায়িত্বের যোগ্যতা জন্মায় না”

( ল্যাবরেটরি ~ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

২৫#


❝সংসারে সাধারণত স্ত্রীকে স্বামী যতটা চেনে স্বামীকে স্ত্রী তাহার চেয়ে অনেক বেশি চেনে ; কিন্তু স্বয়ামীর প্রকৃতি যদি অত্যন্ত সূক্ষ্ম হয় তবে স্ত্রীর অণুবীক্ষণে তাহার সমস্তটা ধরা পড়ে না।❞

📖 মণিহারা(গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

২৬#

❝একদিন একটা রিপুর ঝড় আসিয়া যাহাদের অকস্মাৎ পতন হয় তাহারা আর-একটা হৃদয়াবেগে আবার উপরে উঠিতে পারে, কিন্তু এই যে দিনে দিনে পলে পলে মজ্জার ভিতর হইতে কঠিন হইয়া যাওয়া, বাহিরে বাড়িয়া উঠিতে উঠিতে অন্তরকে তিলে তিলে চাপিয়া ফেলা, ইহার প্রতিকার ভাবিতে গেলে কোনো রাস্তা খুঁজিয়া পাই না।❞

📖 দৃষ্টিদান (গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


২৭#

❝মা হইয়া কোলের শিশুকে ভুলাইতে হয়,স্ত্রী হইয়া শিশুর বাপকে ভুলাইতে হয় —— মেয়েদের এত ছলনার প্রয়োজন!❞

📖 দৃষ্টিদান (গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

২৮#

❝টাকা জিনিসটা ভালো নয়। উহাতে মন চাপা পড়িয়া যায়। মন যখন রাজত্ব করে তখন সে আপনার সুখ আপনি সৃষ্টি করিতে পারে, কিন্তু ধন যখন সুখসঞ্চয়ের ভার নেয়, তখন মনের আর কাজ থাকে না। তখন, আগে যেখানে মনের সুখ ছিল, জিনিসপত্র আসবাব আয়োজন সেই জায়গাটুকু জুড়িয়া বসে। তখন সুখের পরিবর্তে কেবল সামগ্রী পাওয়া যায়।❞

📖 দৃষ্টিদান (গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


২৯#

“নাম যার বড় তার সংসারটা ঘরে অল্প, বাইরেই বেশি।”

(শেষের কবিতা ~ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

৩০#

“অপেক্ষাই জীবন। তার পরে সত্যি একদিন হয়ত কুসুম বনে এসে তরী ঠেকবে”

(নৌকাডুবি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

৩১#

❝জেল ভালো। কিন্তু জেলের বাহিরে যে স্বাধীনতা আছে সে আমাদিগকে প্রতারণা করিয়া বিপদে ফেলে। আর,যদি সৎসঙ্গের কথা বল তো, জেলের মধ্যে মিথ্যাবাদী কৃতঘ্ন কাপুরুষের সংখ্যা অল্প, কারণ স্থান পরিমিত — বাহিরে অনেক বেশি।❞

📖 মেঘ ও রৌদ্র(গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৩২#

❝অনেক অপরাধ আছে যাহা প্রত্যক্ষ করিবামাত্র তৎক্ষনাৎ নিজ হস্তে তাহার শাস্তি বিধান না করিলে অন্তর্যামী বিধাতাপুরুষ যেন অন্তরের মধ্যে থাকিয়া প্রত্যক্ষকারীকে দগ্ধ করিতে থাকেন।❞

📖 মেঘ ও রৌদ্র(গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৩৩#

“পৃথিবীর জলবিভাগের ন্যায় মানবজন্মটা আহার এবং প্রহারে বিভক্ত ; প্রহারের অংশটাই অধিক।”

📖 আপদ(গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৩৪#

❝হায় রে হায়, মানুষ ঠকিতেই চায়, ঠকিতেই ভালোবাসে, অথচ পাছে কেহ নির্বোধ মনে করে এ ভয়টুকুও ষোলো আনা আছে। এইজন্য প্রাণপণে সেয়ানা হইবার চেষ্টা করে।তাহার ফল হয় এই যে,সেই শেষকালটা ঠকে, কিন্তু বিস্তর আড়ম্বর করিয়া ঠকে।❞

📖 মধ্যবর্তিনী(গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৩৫#

❝এক- অঞ্জলি পারদকে মুষ্টির মধ্যে শক্ত করিয়া ধরা যেমন দুঃসাধ্য এই মুষ্টিমেয় স্ত্রীটুকুকেও কঠিন করিয়া ধরিয়া রাখা তেমনি অসম্ভব – ও যেন দশ আঙুলের ফাঁক দিয়া বাহির হইয়া পড়ে।❞

📖 মধ্যবর্তিনী(গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৩৬#

“দুঃখের সান্তনা যে ঈশ্বর কোথায় কত জায়গায় রেখেছেন তা সব সময় জানতে পারিনে বলেই আমরা কষ্ট পাই।”

(গোরা ~ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

৩৭#

❝এক-একজন লোক স্বপ্নাবস্থায় নির্ভীকভাবে অত্যন্ত সংকটের পথ দিয়া চলিয়া যায়, মুহূর্তমাত্র চিন্তা করে না। অনেক জাগ্রত মানুষেরও তেমনি চিরস্বপ্নাবস্থা উপস্থিত হয় ; কিছুমাত্র জ্ঞান থাকে না,বিপদের সংকীর্ণ পথ দিয়া নিশ্চিন্তমনে অগ্রসর হইতে থাকে, অবশেষে নিদারুণ সর্বনাশের মধ্যে গিয়া জাগ্রত হইয়া উঠে।❞

📖 মধ্যবর্তিনী(গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


৩৮#

❝পরের ছেলে মানুষ করিলে তাহার প্রতি প্রাণের টান আরো যেন বেশি হয়, কারণ তাহার উপরে অধিকার থাকে না ; তাহার উপরে কোনো সামাজিক দাবি নাই, কেবল স্নেহের দাবি — কিন্তু কেবলমাত্র স্নেহ সমাজের সমক্ষে আপনার দাবি কোনো দলিল – অনুসারে সপ্রমাণ করিতে পারে না এবং চাহেও না,কেবল অনিশ্চিত প্রাণের ধনটিকে দ্বিগুণ ব্যাকুলতার সহিত ভালোবাসে।❞

📖 জীবিত ও মৃত(গল্পগুচ্ছ) , ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


৩৯#

❝যিনি যত মালা জপুন, পৃথিবীতে আমার মতোই সব বেটা। সংসারে সাধু- অসাধুর মধ্যে প্রভেদ এই যে, সাধুরা কপট আর অসাধুরা অকপট।❞

📖 সমস্যাপূরণ(গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


৪০#

❝ অন্তরের চীৎকারধ্বনি যদি বাহিরে শুনা যাইত, তবে সেই চৈত্রমাসের সুখসুপ্ত জ্যোৎস্নানিশীথিনী অকস্মাৎ তীব্রতম আর্তস্বরে দীর্ণ বিদীর্ণ হইয়া যাইত। ❞

📖 মানভঞ্জন(গল্পগুচ্ছ) , ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৪১#

যে নদীর তীরে সূর্যাস্ত দেখেনি, সে পৃথিবীর কিছুই দেখেনি!
—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


৪২#

❝মুখের পানে চাহিনু অনিমেষে,
বাজিল বুকে সুখের মতো ব্যথা।❞
—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৪৩#

“বাহিরকেই চরম করিয়া দেখিলে ভিতরকে দেখা হয় না এবং বাহিরকেও সত্যরূপে গ্রহণ করা অসম্ভব হয়।”

(যাত্রার পূর্বপত্র ~ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)


৪৪#

❝যাহা দিলাম তাহা উজাড় করিয়াই দিলাম। এখন ফিরিয়া তাকাইতে গেলে দুঃখ পাইতে হইবে। অধিকার ছাড়িয়া দিয়া অধিকার রাখিতে যাইবার মতো এমন বিড়ম্বনা আর নাই।❞
—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (হৈমন্তী; গল্পগুচ্ছ)


৪৫#

❝পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দূরত্ব কোনটি জানো? নাহ, জীবন থেকে মৃত্যু পর্যন্ত, উত্তরটা সঠিক নয়। সবচেয়ে বড় দূরত্ব হলো যখন আমি তোমার সামনে থাকি, কিন্তু তুমি জানো না যে আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি।❞
—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৪৬#

❝ সামনে একটা পাথর পড়লে যে লোক ঘুরে না গিয়ে সেটা ডিঙিয়ে পথ সংক্ষেপ করতে চায়, বিলম্ব তারই অদৃষ্টে আছে। ❞

📖 কর্মফল(গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


৪৭#


“পৃথিবীতে অনেক মুখ চোখে পড়ে, কিন্তু এক-একটি মুখ বলা নাই একেবারে মনের মধ্যে গিয়া উত্তীর্ণ হয়। সে কেবল সৌন্দর্যের জন্য নহে, আর-একটা কী গুণ আছে। সে গুণটি বোধ করি স্বচ্ছতা। অধিকাংশ মুখের মধ্যেই মনুষ্যপ্রকৃতিটি আপনাকে পরিস্ফুটরূপে প্রকাশ করিতে পারে না ; যে মুখে সেই অন্তরগুহাবাসী রহস্যময় লোকটি অবাধে বাহির হইয়া দেখা দেয় সে মুখ সহস্রের মধ্যে চোখে পড়ে এবং এক পলকে মনে মুদ্রিত হইয়া যায়। “

📚সমাপ্তি 🖊️রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)


৪৮#


আশা কহিল, “এসো ভাই, তোমার সঙ্গে একটা কিছু পাতাই।”
বিনোদিনী হাসিয়া কহিল, “কী পাতাইবে।”
আশা গঙ্গাজল বকুলফুল প্রভৃতি অনেকগুলি ভালো ভালো জিনিসের নাম করিল।
বিনোদিনী কহিল, “ও-সব পুরানো হইয়া গেছে; আদরের নামের আর আদর নাই।”
আশা কহিল, “তোমার কোন্‌টা পছন্দ।”
বিনোদিনী হাসিয়া কহিল, “চোখের বালি।”
শ্রুতিমধুর নামের দিকেই আশার ঝোঁক ছিল, কিন্তু বিনোদিনীর পরামর্শে আদরের গালিটিই গ্রহণ করিল।
বিনোদিনীর গলা ধরিয়া বলিল, “চোখের বালি।” বলিয়া হাসিয়া লুটাইয়া পড়িল।

📖চোখের বালি, 🖋️রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।


৪৯#

❝স্ত্রীর সঙ্গে স্বামীর স্বভাবের অমিল থাকলেই মিল ভালো হয়,শুকনো মাটির সঙ্গে জলধারার মতো।❞

📖 সংষ্কার (গল্পগুচ্ছ), ✒ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


৫০#

“পৃথিবীতে অনেক মুখ চোখে পড়ে, কিন্তু এক-একটি মুখ বলা নাই একেবারে মনের মধ্যে গিয়া উত্তীর্ণ হয়। সে কেবল সৌন্দর্যের জন্য নহে, আর-একটা কী গুণ আছে। সে গুণটি বোধ করি স্বচ্ছতা। অধিকাংশ মুখের মধ্যেই মনুষ্যপ্রকৃতিটি আপনাকে পরিস্ফুটরূপে প্রকাশ করিতে পারে না ; যে মুখে সেই অন্তরগুহাবাসী রহস্যময় লোকটি অবাধে বাহির হইয়া দেখা দেয় সে মুখ সহস্রের মধ্যে চোখে পড়ে এবং এক পলকে মনে মুদ্রিত হইয়া যায়। “

📖 সমাপ্তি(গল্পগুচ্ছ) 🖋️ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

Leave a Reply