গত ৭০ বছরে শত শত কুকুর কোনো সুস্পষ্ট কারণ ছাড়াই এই সেতু থেকে লাফ দিয়ে আহত হয়েছে ও অনেক কুকুর মারা গেছে।
ব্রিজটি স্কটল্যান্ডের ডাম্বারটনের মিল্টন নামক গ্রামে অবস্থিত। ব্রিজটির নাম ওভারটাউন, যা ১৯ শতকে নির্মিত হয়েছিল। কুকুরদের আত্মহত্যার কারনে এই ব্রিজ নিজের নাম হারিয়ে রূপ নিয়েছে ‘ডগ’স সুইসাইড ব্রিজ।
গথিক শৈলীতে নির্মিত এই সেতুটির কাঠামো অসামান্য। সেতুর থেকে ৫০ ফুট নিচেই রয়েছে একটি পাথুরে গিরিখাত।
জেমস ম্যাকমোহন নামের একজন ভদ্রলোক একটি রিপোর্টে লিখেছিলেন,
একবার একটি কুকুর লাফ দিয়ে বেঁচে গিয়েছিল, কিন্তু বেঁচে যাওয়ার পরেও সেই কুকুরটি আবার ব্রিজে উঠে দ্বিতীয়বার লাফ দিয়েছিল।
জেমস ম্যাকমোহন তার রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন ১৯৫০ এর দশক থেকে এই ব্রিজ থেকে লাফ দিয়ে কুকুর মারা গেছে প্রায় ৫০ টি এবং আহত হয়েছে প্রায় ৬০০ কুকুর।
সময়ে সাথে সাথে এই ব্রিজ মানুষের কাছে কৌতুহলী হয়ে উঠে, বিভিন্ন নিউজ চ্যানেল, পত্রিকা ও ম্যাগাজিন তাদের ফিচার হিসেবে প্রচার করতে শুরু করে।
২০১০ সালে ডেভিড স্যান্ডস নামে একজন প্রাণী আচরণবিদ এই আত্মহত্যার ব্যাপারে গবেষণা করেছিলেন। ডেভিড স্যান্ডস বিশ্বাস করতেনএই আত্মহত্যার ব্যাপারটি কুকুরদের কৌতুহল ছাড়া আর কিছুই নয়।
তিনি এ-ও অনুমান করেছিলেন যে বন্য প্রাণীর ঘ্রাণ, বিশেষ করে ইঁদুর, এবং সম্ভবত তাদের নীচের পাথরের চারপাশে চলাফেরা কুকুরগুলিকে উত্তেজিত করেছে যেখানে তারা লাফ দিতে ইচ্ছুক।
তিনি তার গবেষণার শেষে মতামত দেন যে “আমি মনে করি ওভারটাউন ব্রিজের সমস্ত কুকুরেরই আত্মহত্যার কারণ ছিলো কৌতূহল”।
সেতুটির সাথে অতিপ্রাকৃতিক কিংবা অশুভ সম্পর্ক নেই। ১৯৯৪ সালে কেভিন ময়)(আদালতের রায়ে তিনি একজন মানসিক ভারসাম্যহীন রোগী) নামের ৩২ বছর বয়সী এক ব্যক্তি নিজের শিশু ছেলে সন্তান কে এই ব্রীজ থেকে ফেলে দেন, এবং নিজেও লাফিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন কিন্তু তার স্ত্রী তাকে বাঁধা দিয়ে আত্মহত্যার থেকে বাঁচান। কেভিনের বেঁচে থাকলেও দুঃখজনকভাবে তার শিশুটি সন্তানটি পরের দিন হাসপাতালে মারা যায়।
সেতুর সঙ্গে এমন অস্বাভাবিক ঘটনা সেতুটিকে অতিপ্রাকৃতিক রূপ দেয়। সেতুটি ডগ’স সুইসাইড ব্রজ নাম ছাড়াও মানুষজনের কাছে এই সেতু ‘ব্রিজ অব ডেথ’ বা মৃত্যুর সেতু নামেও পরিচিত পরিচিত।
ব্রিজের আশেপাশের বাড়িগুলো ও মানুষদের কাছে ভুতুড়ে মনে হতে থাকে থাকে সময়ের সাথে সাথে। কেনো এই ব্রিজ থেকে কুকুররা সুইসাইড করছে তা নিয়ে মানুষেরা তৈরি মুখরোচক অতিপ্রাকৃত সব গালগল্প। তার মধ্যে বেশ কিছু গল্প বেশ জনপ্রিয়তা ও পেয়েছে, গল্পের ঘটবার ব্যখ্যার জন্য।
কুকুর গুলো কেনো এই ব্রজ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে তার রহস্য উৎঘাটন এখনো কেউ করতে পারে নি।
পশুর ঘ্রাণ/কৌতূহল নিয়ে যেসব তত্ত্ব দেওয়া হয়েছে তা অনেক অর্থবহ কিন্তু কখনই পুরোপুরি প্রমাণিত হতে পারে না।