You are currently viewing ডক্টর ফস্টাস: তিনি শয়তানের কাছে নিজের আত্মা বিক্রি করেছিলেন

ডক্টর ফস্টাস: তিনি শয়তানের কাছে নিজের আত্মা বিক্রি করেছিলেন

ডক্টর ফস্টাস বিখ্যাত ইংরেজ নাট্যকার ক্রিস্টোফার মার্লোর বিখ্যাত নাটকের একটি। ক্রিস্টোফার মার্লো ডক্টর ফস্টাস নাটকটি তৈরি করেছিলেন Historia Von D. Jonan Fausten বইয়ের কাহিনীর উপর ভিত্তি করে। বইটি ১৫৮৭ সালে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট শহরে প্রকাশিত হয়।

নাট্যকার ক্রিস্টোফার মার্লো Image Credit: Goodreads

বইয়ের প্রধান চরিত্র জোহান ফস্টেন ১৫১০ সাল থেকে ১৫৪০ সালের মধ্যবর্তী সময়ে জার্মানিতে যাদুবিদ্যা ও যাদুকর হিসেবে বিশেষ খ্যাতি লাভ করেন। কিন্তু আকষ্মিকভাবেই তার মৃত্যু ঘটে।

ডক্টর ফস্টাস নাটকের ঘটনা সংক্ষেপে

ডক্টর ফস্টাসের জন্ম হয় জার্মানির রোডস নামের একটি ছোট্ট শহরে। তার পিতা মাতা কেউই উচ্চবংশীয় ছিলেন না। ফস্টাস তার শৈশব, কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পা দিলে তিনি জামানির উইটেনবার্গ শহরে চলে আসেন। ফস্টাসের দেখাশোনা ও আর্থিক সাহায্য সহযোগিতা তার নিকট আত্মীয়রাই করতেন।

খুব অল্প বয়সেই ফস্টাস ধর্মশাস্ত্র, যুক্তিবিদ্যা, চিকিৎসা ও আইনশাস্ত্র সকল ক্ষেত্রেই বিচরণ করেছেন।ধর্মশাস্ত্র ও ঈশ্বর সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে তী্ক বিতর্ক করতে বিশেষ ভালোবাসতেন ফস্টাস। এতো বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করার পরেও ফস্টাসের মনে তৃপ্তি আসে নি। সে চাচ্ছিল এমন জ্ঞান অর্জন করতে যার মাধ্যমে সে এতোটাই প্রভাবশালী ও শক্তিশালী হয়ে উঠবে যে দুই মেরুর সবকিছুই তার আয়ত্বে থাকবে।

আর তাই সে সিদ্ধান্ত নেয় সে ডাকিনীবিদ্যা ও যাদুবিদ্যা অর্জনের মাধ্যমে সে নিজের মনোবাসনা পূর্ণ করবে। আর তাই ফস্টাস ডাকিনীবিদ্যা চর্চা করতে থাকে এবং লুসিফারের কাছে নিজের আত্মাকে বিক্রি করে দেয়। ফস্টাস স্বর্গসুখের চেয়েও ইন্দ্রজালচর্চাকেই বেশি শ্রেয় মনে করেছেন।

Image credit: O captaon, My captain

নিজের আত্মাকে লুসিফারের কাছে বিক্রি করে ২৪ বছরের জন্য অতি মানবীয় ক্ষমতা অর্জন করেন ফস্টাস।

কিন্তু সে এই ২৪ বছর তার ক্ষমতা তুচ্ছ সব কাজে ব্যায় করতে থাকেন। যেমনঃ- অদৃশ্য হয়ে পোপের ভোজন সভায় তাদের সাথে মশকরা করা, জার্মান সম্রাটের সামনে আলেকজান্ডার ও তার প্রণয়ীর রূপে দুই প্রেতাত্মাকে হাজির করা, জার্মান সম্রাটের নাইটের মাথায় শিং গজিয়ে তোলা, ব্যবসায়ীর কাছে ঘোড়া বিক্রির নামে প্রতারণা করে খড় বিক্রি করা।

যাদুবিদ্যার সাহায্যে ডিউক অব ভ্যানহোল্ডের দরবারে ডিউকে শীতকালে যাদুর মাধ্যমে আঙ্গুর ফল খাওয়ানো। পন্ডিতদের সামনে যাদুবিদ্যার মাধ্যমে ট্রয়ের হেলেন কে উপস্থাপন করা এবং হেলেন কে নিজের প্রেয়সী হিসেবে কাছে পেতে চেয়ে নিজের কামনা বাসনা জেগে উঠা।

এমন সব তুচ্ছ কাজ করতে করতে কখন যে ফস্টাসের লুসিফারের দেয়া ২৪ বছর ফুরিয়ে যায় তা সে নিজেও টের পায় নি। ফস্টাস তার জীবনের শেষ কয়েকটি মুহূর্ত প্রচন্ড রকম অস্থিরতা ও মানসিক অশান্তির মধ্যে কাটায়। ঘড়িতে তখন রাত ১২ টা বাজলে লুসিফার ও তার অনুসারীরা ফস্টাসকে টেনে হিচরে নরকে নিয়ে যায়। সে সময়ে ব্রজ্যের শব্দে ফস্টাসের ভয়াল চিৎকার সকলের কাছে চাপা পড়ে যায়।

পরবর্তীতে ফস্টাসের বন্ধুরা তার ঘরে প্রবেশ করে দেখতে পায় ফস্টাসের শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় সারা ঘরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।

Leave a Reply

This Post Has 2 Comments

  1. Anonymous

    Many many Thanks fore share this post