মাদার কারেজ এন্ড হার চিল্ড্রেন: যুদ্ধের পেছনের ভয়াবহ বাস্তবতা

নাটকের শুরু হয় ১৬২৪ সালের বসন্তে সুইডেনের ডালার্না অঞ্চলে যখন ত্রিশ বছরের যুদ্ধ চলমান। নাটকের শুরুতে দেখা যায় এক সুইডিশ সেনা নিয়োগকর্তা এক সার্জেন্টের সাথে কথা বলছেন। তিনি বলছেন সৈন্য খুঁজে বের করা, তারপর তাদের সেনাবাহিনীতে নিযোগ দেওয়া একটি খুবই কঠিন ও বিরক্তিকর কাজ। সে সময় তাদের সামনে একটি ভ্রাম্যমাণ ক্যান্টিন গাড়ি বা ওয়াগন এসে থামে। ক্যান্টিনটির মালিক আনা ফিয়ারলিং নামের এক নারী। যিনি সেনাবাহিনীর বিভিন্ন রেজিমেন্টের ক্যম্পের মানুষের কাছে মাদার কারেজ বা সাহসী মা নামে পরিচিত। তিনি তার ভ্রাম্যমাণ ক্যান্টিনে খাদ্যসামগ্রী, পানীয়, বস্ত্র এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি করেন। মাদার কারেজের সাথে রয়েছে তার দুই ছেলে এলিফ ও সুইস চিজ আর একজন বোবা মেয়ে ক্যাথরিন। ক্যাথরিন কথা বলতে না পারলেও শুনতে পান।

Continue Readingমাদার কারেজ এন্ড হার চিল্ড্রেন: যুদ্ধের পেছনের ভয়াবহ বাস্তবতা

দ্য আউটসাইডার : নির্লিপ্ততা, অর্থহীনতা ও বৈরাগ্যপূর্ণ অস্তিত্বের প্রতিচ্ছবি

আলবার্ট কামুস উপন্যাসের সময়কাল হিসেবে বেছে নিয়েছেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্ববর্তী সময়ের অর্থাৎ ১৯৩০ এর দশকের আলজেরিয়াকে। আলজেরিয়া তখন ফ্রান্সের উপনিবেশ ছিল। এই উপন্যাসের প্রধান চরিত্র মারসো। একই সাথে তিনি এই উপন্যাসের ন্যারেটর অর্থাৎ বর্ণনাকারী। মারসো আলজেরিয়ার একটি অফিসে কেরানির কাজ করেন। তার অফিসের বস তাকে প্যারিসে বদলি করার সুযোগ দিলেও তা সে গ্রহণ করেনি। এই প্রস্তাব গ্রহণ করলে তার চাকরির দ্রুত উন্নতি ঘটতো। তার চাকরির প্রতি আগ্রহের অভাবই বোঝায় যে তিনি সমাজের প্রচলিত "উন্নতি" ধারণাকে বিশেষ গুরুত্ব দেন না।

Continue Readingদ্য আউটসাইডার : নির্লিপ্ততা, অর্থহীনতা ও বৈরাগ্যপূর্ণ অস্তিত্বের প্রতিচ্ছবি

প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস : প্রেম, গর্ব ও আত্মবিশ্বাসের মধ্যকার দ্বন্দ্ব

উপন্যাসের শুরুতে দেখা যায় মিস্টার বেনেট তার লাইব্রেরীতে বই পড়ছেন। মিস্টার বেনেট বই পড়ুয়া ও একাকি স্বভাবের মানুষ। সেই সময় তার স্ত্রী মিসেস বেনেট তাকে বলতে শুরু করেন, মিসেস লং এর কাছে তিনি খবর পেয়েছেন যে নেদারফিল্ড পার্কে চার্লস বিংলি নামের এক ধনী সুদর্শন ব্যাচেলর পুরুষ ভাড়া নিয়েছেন। বছরে তার আয় ৪ হাজার পাউন্ডের বেশি। এমন সুযোগ কোনোভাবেই হাতছাড়া করা যাবে না। তার ৫ মেয়ের মধ্যে একজনকে তার কাছে বিয়ে দিতেই হবে।

Continue Readingপ্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস : প্রেম, গর্ব ও আত্মবিশ্বাসের মধ্যকার দ্বন্দ্ব

ওয়েটিং ফর গডো : শূণ্যতা ও অর্থহীন জীবনের অবিরাম অপেক্ষা

অ্যাবসার্ড নাটকের ধারণাটি এসেছে বিখ্যাত ফরাসি লেখক ও দার্শনিক আলবার্ট কামুসের লেখা বই ‘The Myth of Sisyphus’ থেকে যা ১৯৪২ সালে প্রকাশিত হয়। এই বইয়ে আলবার্ট কামুস তার জীবন দর্শনকে ব্যাখ্যা করেছেন অনেকটা এভাবে যে, মানুষ বাস্তবত একটি অর্থহীন ও শূন্য জগতে বাস করে। অ্যাবসার্ড বলতে কামুস বুঝাতে চেয়েছেন মানুষের জীবনের অর্থ খোঁজার চেষ্টা ও জীবনের অর্থহীনতার সংঘাতকে। মানুষ তার জীবনের উদ্দেশ্য ও অর্থ খোঁজার চেষ্টা করে কিন্তু এই পৃথিবী তা দিতে অক্ষম।

Continue Readingওয়েটিং ফর গডো : শূণ্যতা ও অর্থহীন জীবনের অবিরাম অপেক্ষা

এ টেল অব টু সিটিজ : ফরাসি বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে রচিত এক অসাধারণ উপন্যাস

সময়টা ১৭৭৫ সাল, ফ্রান্সের শাসক ছিলেন রাজা ষোড়শ লুই আর ইংল্যান্ডের শাসক রাজা তৃতীয় জর্জ। পুরো ইউরোপে তখন বিশৃঙ্খল অবস্থার বিরাজ করছে। ফ্রান্সের রাজতন্ত্র তখন অবক্ষয় হতে শুরু করেছে। ফ্রান্সের মতো একই চিত্র ইংল্যান্ডেও বিরাজমান। জার্ভিস লরি নামের এক ব্যাংকার ডোভারে ভ্রমণ করেন লুসি ম্যানেট নামক এক তরুণীর সাথে সাক্ষাৎ করতে। তিনি টেলসন ব্যাংকের ফ্রান্সের প্যারিস শাখা থেকে একটি গোপন বার্তা পান। যে বার্তায় বলা হয় ড. আলেকজান্ডার ম্যানেট বেঁচে আছেন। এই গুরুত্বপূর্ণ খবরটি লুসিকে জানাতে লরি লুসির সাথে দেখা করেন। লুসি জানতো সে একজন অনাথ, ছোটবেলাতেই তার বাবা-মা উভয়েই মারা গেছে। আর তাকে লালন পালন করতো তার নার্স ও অভিভাবক মিসেস প্রস।

Continue Readingএ টেল অব টু সিটিজ : ফরাসি বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে রচিত এক অসাধারণ উপন্যাস

শার্লট ব্রন্টি: ইংরেজি সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র

শার্লট ব্রন্টি তার বোনেদের সঙ্গে প্রথমবার স্কুলে ভর্তি হন ১৮২৪ সালে। তাদের বাবা প্যাট্রিক ব্রন্টি তাদের সকল কণ্যাকে “কাওয়ান ব্রিজ স্কুল” নামক এক স্কুলে পাঠান। এই স্কুলটি ছিলো শুধুমাত্র গরিব ধর্মযাজকের মেয়ে সন্তানদের জন্য প্রতিষ্ঠিত একটি বোর্ডিং স্কুল। এই স্কুলের পরিবেশ ছিলো খুবই অস্বাস্থ্যকর এবং কঠোর। আর এই স্কুলের জীবনযাত্রার মান এতোটাই নিম্নস্তরের ছিলো যে শার্লটের দুই বোন মারিয়া ও এলিজাবেথ যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।

Continue Readingশার্লট ব্রন্টি: ইংরেজি সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র

জেন আয়ার: আত্মবিশ্বাস ও সংগ্রামের গল্প

লেখিকা শার্লট ব্রন্টির কালজয়ী উপন্যাস ‘জেন আয়ার’ প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৪৭ সালে। প্রকাশের সময় উপন্যাসের নাম ছিলো Jane Eyre: An Autobiography, বইটি প্রকাশের সময় চার্লট ব্রন্টে ‘কারর বেল’ ছদ্মনামে প্রকাশ করেছিলেন। উপন্যাস চরিত্র ও প্লট হিসেবে তিনি তার জীবনের বিভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে গল্প সাজিয়েছেন। ভিক্টোরিয়ান যুগের এই উপন্যাসটিতে তিনি তুলে ধরেছেন নারীর ব্যক্তিসচেতনতা, ব্যক্তিস্বাধীনতা, ভালোবাসা, নৈতিকতা ও সামাজিক প্রতিকূলতা পাড়ি দিয়ে স্রোতের বিপরীতে চলা এক নারীর জীবনকে।

Continue Readingজেন আয়ার: আত্মবিশ্বাস ও সংগ্রামের গল্প

টমাস হার্ডি: ভিক্টোরিয়ান সমাজের বিপরীতে এক সাহসী কণ্ঠ

তার লেখায় দেখতে পাওয়া যায় সমাজের নিচু শ্রেণীতে বাস করা সাধারণ মানুষের জীবন সংগ্রাম, দুঃখ যন্ত্রণা ও ভাগ্যের পরিহাস। ভিক্টোরিয়ান সমাজের নৈতিকতা, শ্রেণীবিভাগ, এবং যান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন এক সাহসী কণ্ঠস্বর। ভিক্টোরিয়ান যুগের রক্ষণশীল মানুষদের রক্ষণশীলতার প্রতি তিনি তীব্র সমালোচনা প্রকাশ করেছেন তার লেখায়। নারীর অধিকারের পক্ষে কথা বলেছেন, সেই সাথে সমাজের যৌন নৈতিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।

Continue Readingটমাস হার্ডি: ভিক্টোরিয়ান সমাজের বিপরীতে এক সাহসী কণ্ঠ

টেস অব দ্য ডারবারভিলস: এক নিষ্পাপ নারীর করুণ পরিণতি

উপন্যাসের শুরুতেই দেখতে পাই জন ডার্বিফিল্ড মাঝবয়সী এক লোক যার সাথে এক যাজকের দেখা হয়। সেই যাজক তাকে স্যার বলে সম্বোধন করায়, তার কারণ জানতে চাইলে তিনি জন ডার্বিফিল্ড কে বলেন; তিনি একজন ইতিহাসবেত্তা। তিনি জানতে পেরেছেন জন ডার্বিফিল্ড ঐতিহাসিক সম্ভান্ত্র ডার্ভারভিল বাংশের মানুষ। এই কথা শুনে জন ডার্বিফিল্ড বেশ খুশি হয়। সেই সাথে বংশ গৌরবে অহংকারের সাথে তার বাড়ি ফেরেন। বাড়ি ফিরে তিনি তার স্ত্রীর সাথে পুরো ঘটনাটি বলেন। তিনি বলেন তারা কোনো সাধারণ মানুষজন নয় তারা বিখ্যাত ডার্ভারভিল বংশের মানুষ।

Continue Readingটেস অব দ্য ডারবারভিলস: এক নিষ্পাপ নারীর করুণ পরিণতি

মিডিয়া : এক প্রতিশোধপরায়ণা জাদুকরী নারী

ইয়লকাস রাজ্যের রাজা ছিলেন ইসন। রাজা ইসনের একমাত্র ছেলে জেসন। রাজা ইসনের মৃত্যুর সময় তার পুত্র জেসনের বয়স ছিলো খুবই কম, রাজ্যের দায়িত্বভার নেওয়া ছোট্ট জেসনের পক্ষে সম্ভব না। আর তাই রাজা ইসন তার সৎ ছোটভাই পেলিয়াসকে রাজ্যের দায়িত্ব দিয়ে যান। এবং বলে যান তার ছেলে জেসন যখন বড় ও দায়িত্বশীল একজন পুরুষ হয়ে উঠবে তখন যেনো তার ছেলেকে রাজ্যের দায়িত্বভার বুঝিয়ে দেন।

Continue Readingমিডিয়া : এক প্রতিশোধপরায়ণা জাদুকরী নারী

Norwegian Wood (নরওয়েজিয়ান ওড) : যে উপন্যাস বিষন্নতার দিকে ঠেলে দেয়

সময়টা ১৯৬০ এর দশকের শেষ দিকের। জাপানের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আন্দোলনের সময় ১৯ বছরের তরু ওয়াতানাবে টোকিওতে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যকলা নিয়ে পড়াশোনা করতে।

Continue ReadingNorwegian Wood (নরওয়েজিয়ান ওড) : যে উপন্যাস বিষন্নতার দিকে ঠেলে দেয়

ওরুনৌকো: রাজকুমার থেকে ক্রীতদাসে পরিণত হওয়ার করুণ কাহিনি

উপন্যাসের কাহিনি শুরু হয় আফ্রিকার এক দেশ যার নাম কোরামেন্টিন (বর্তমানে তা পরিচিত ঘানা নামে)। সেই কোরামেন্টাইনের এক রাজার নাতির নাম ওরুনৌকো। সেই রাজার বয়স প্রায় ১০০ এর অধিক। তার ছেলে ছিলো ৩২ জন, তাদের সকলেই যুদ্ধে মারা গেছেন। কারন আফ্রিকায় বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে তখন সবসময় যুদ্ধ বিগ্রহ লেগেই থাকতো। 

Continue Readingওরুনৌকো: রাজকুমার থেকে ক্রীতদাসে পরিণত হওয়ার করুণ কাহিনি

উইলিয়াম শেক্সপিয়ার: অজপাড়াগাঁ থেকে সাহিত্য সম্রাট

জেফ্রি চসারের মৃত্যুর পর ইংরেজি সাহিত্যের জগতে আঁধার নেমে এসেছিলো। চসারের মৃত্যুর প্রায় ১৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও; ইংরেজি সাহিত্যে উল্লেখযোগ্য…

Continue Readingউইলিয়াম শেক্সপিয়ার: অজপাড়াগাঁ থেকে সাহিত্য সম্রাট

দ্য থ্রি মাস্কেটিয়ার্স: উপন্যাসের আড়ালে মাস্কেটিয়ার্সদের বাস্তব জীবন

দ্য থ্রি মাস্কেটিয়ার্স উপন্যাসটি ১৭ শতকের ফ্রান্সের প্রেক্ষাপটে রচিত। উপন্যাসের শুরু হয় ফ্রান্সের গ্যাসকনের ডার্টানিয়ান নামক এক যুবক ছেলেকে দিয়ে। ডার্টানিয়ান গ্যাসকন ছেড়ে প্যারিসের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তার জীবনের উদ্দেশ্য সে রাজার রক্ষীবাহিনী মাস্কেটিয়ার্সের দলে যোগ দিয়ে নিজের জীবনের ক্যারিয়ার গড়বে। আর প্যারিসে এসেই বিভিন্ন ঘটনাবহুল দৃশ্যপটের মাধ্যমে তার বন্ধুত্ব হয় ফ্রান্সের রাজা লুই ত্রয়োদশ এর তিন অনুগত মাস্কেটিয়ার অ্যাথোস, পোর্থোস এবং অ্যারামিসের সাথে।

Continue Readingদ্য থ্রি মাস্কেটিয়ার্স: উপন্যাসের আড়ালে মাস্কেটিয়ার্সদের বাস্তব জীবন

অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড সিন্ড্রোম: রূপকথার চরিত্র যখন অসুখ

১৮৬৫ সালে প্রথম প্রকাশিত হয় লুইস ক্যারলের কালজয়ী ভিক্টোরিয়ান ক্লাসিক ‘অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড’। শিশুসাহিত্য হলেও এটি এতোটাই জনপ্রিয় হয় যে শিশুদের পাশাপাশাই তরুণ ও বৃদ্ধরাও এটি পছন্দ করতে শুরু করে। বইটির প্রধান চরিত্র অ্যালিসের কার্যকলাপ নিয়ে এমনি এক বিরল মানসিক ব্যাধি বা সিন্ড্রোম রয়েছে যার নামকরণ করা হয়েছে অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড সিন্ড্রোম নামে। অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড সিন্ড্রোম নাম ছাড়াও এটি এআইডব্লিউএস, টডস সিনড্রোম বা ডিসমেট্রোপসিয়া নামেও পরিচিত।

Continue Readingঅ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড সিন্ড্রোম: রূপকথার চরিত্র যখন অসুখ