You are currently viewing হিমুর উক্তি : হিমু উপন্যাসের ৩০ টি বিখ্যাত উক্তি

হিমুর উক্তি : হিমু উপন্যাসের ৩০ টি বিখ্যাত উক্তি

হিমু বাংলাদেশের কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ সৃষ্ট একটি জনপ্রিয় কাল্পনিক চরিত্র। হিমু মূলত একজন বেকার যুবক ; যার আচরণে বেখেয়ালী, জীবনযাপনে ছন্নছাড়া ও বৈষয়িক ব্যাপারে সম্পূর্ণ উদাসীন ভাব প্রকাশ পায়। চাকরির সুযোগ থাকলেও সে চাকরি কখনো করে না বলেই সে বেকার। তার অস্বাভাবিক চরিত্রের মধ্যে সে হলুদ পাঞ্জাবি পরে খালি পায়ে রাস্তাঘাটে দিন-রাত ঘুরে বেড়ায় এবং মাঝে মাঝে ভবিষ্যদ্বাণী করে মানুষকে চমকে দেয়।

সুপ্রিয় পাঠক আজ এই ব্লগ পোস্টের হুমায়ূন আহমেদের হিমু সিরিজের বইগুলোর মধ্যে হিমুর সেরা কিছু উক্তি তুলে ধরছি। আশা করছি পাঠকদের তা ভালো লাগবে।

১#

“প্রেমিকা হাত ধরে রাখলে সেই হাত ছাড়িয়ে নেয়া যায়। কিন্তু পুলিশ হাত ধরে রাখলে ছাড়িয়ে নেয়া যায় না।”
―হুমায়ূন আহমেদ (একজন হিমু এবং কয়েকটি ঝিঁ ঝিঁ পোকা)

২#

প্রেম বলিয়া জগতে কিছু নাই। ইহা শরীরের প্রতি শরীরের আকর্ষণ। এই আকর্ষণ প্রকৃতি তৈরি করিয়াছেন যাহাতে তাঁহার সৃষ্টি বজায় থাকে। নর-নারীর মিলনে শিশু জন্মগ্রহণ করিবে- প্রকৃতির সৃষ্টি বজায় থাকিবে।
—হুমায়ূন আহমেদ (হিমুর বাবার কথামালা)

৩#

“আলো যেমন চারপাশ আলো করে তোলে একজন পবিত্র মানুষও তার চারপাশ আলো করে তুলবেই।”
―হুমায়ূন আহমেদ (পারাপার)

৪#

আমি কখনো রূপাকে চিঠি লিখি নি। একবার হঠাৎ একটি চিঠি লিখতে ইচ্ছা হলো। লিখতে বসে দেখি কী লিখব ভেবে পাচ্ছি না। অনেকবার করে একটি লাইন লিখলাম: রূপা তুমি কেমন আছ? সমস্ত পাতা জুড়ে একটি মাত্র বাক্য। সেই চিঠির উত্তর রূপা খুব রাগ করে করে লিখল: তুমি এত পাগল কেন? এতদিন পর একটা চিঠি লিখলে, তারমধ্যেও পাগলামি । কেন এমন কর? তুমি কি ভাবো এইসব পাগলামি দেখে আমি তোমাকে আরো বেশি ভালোবাসব?
—হুমায়ূন আহমেদ (ময়ুরাক্ষী)

৫#

“আজকাল অধিকাংশ মায়েরাই মেয়েদের ভয় পায়।”
—হুমায়ূন আহমেদ (ময়ূরাক্ষী)

৬#

“যে মানুষ নিঃশব্দে হাসে তাহার বিষয়ে খুব সাবধান। দুই ধরনের মানুষ নিঃশব্দে হাসে- অতি উঁচু স্তরের সাধক এবং অতি নিম্নশ্রেণীর পিশাচ চরিত্রের মানুষ।”
―হুমায়ূন আহমেদ (তোমাদের এই নগরে)

৭#

মানব জাতির সমস্যা হচ্ছে তাকে কোনো না কোনো সন্ধানে জীবন কাটাতে হয়। অর্থের সন্ধান, বিত্তের সন্ধান, সুখের সন্ধান, ভালোবাসার সন্ধান, ঈশ্বরের সন্ধান।
—হুমায়ূন আহমেদ (হিমু এবং একটি রাশিয়ান পরী)

৮#

মাঝেমধ্যে চিন্তার জগতে যেতে হয়। চিন্তার জগত বড়ই বিচিত্র!
—হুমায়ূন আহমেদ (হিমু এবং একটি রাশিয়ান পরী)

৯#

ভালো কাজ চিন্তা ভাবনা করে করতে হয় না। মন্দ কাজ অনেক চিন্তাভাবনা করে করতে হয়।
—হুমায়ূন আহমেদ (হিমু এবং একটি রাশিয়ান পরী)

১০#

“টাকা বোকা মানুষকেও বুদ্ধিমান বানিয়ে দেয়।”
—হুমায়ূন আহমেদ (হিমু)

১১#

“মানুষের আগ্রহকে উপেক্ষা করা ঠিক না।”
—হুমায়ূন আহমেদ (দরজার ওপাশে)

১২#

“মুজিবকোট বঙ্গবন্ধুকেই মানায়। এই কোট বেঁটে এবং মোটারা পরলে তাদের লাগে পেঙ্গুইন পাখির মতো।”
—হুমায়ূন আহমেদ (হিমুর নীল জোছনা)

১৩#

❝যে পাখি উড়ে যায়, তাকে ফিরে আসতে হয়। খাঁচায় বন্দি পাখিরই শুধু উড়ে যাওয়া বাঁ ফিরে আসার ব্যাপার থাকে না।❞
—হুমায়ূন আহমেদ (চলে যায় বসন্তের দিন)

১৪#

❝যাদের ঘরে কোনো আকর্ষণ নেই তারা সন্ধ্যাবেলা ঘরে ফেরে না। ঠিক সন্ধ্যায় তারা একধরনের অস্থিরতায় আক্রান্ত হয়।❞
–হুমায়ূন আহমেদ (হিমু)

১৫#

❝সুন্দরী মেয়েদের হাতের লেখা সুন্দর। এটা হল নিপাতনে সিদ্ধ। সুন্দরীরা মনে প্রাণে জানে তারা সুন্দর। তাদের চেষ্টাই থাকে— তাদের ঘিরে যা থাকবে সবই সুন্দর হবে।❞
—হুমায়ূন আহমেদ (হিমুর রূপালী রাত্রি)

১৬#

❝ইউনিভার্সিটির পুরানো বন্ধুর সঙ্গে দেখা হলে, হাসি হাসি করে জিজ্ঞেস করা হয়— তারপর কি খবর ভালো আছেন? এখন কি করছেন?
কলেজের পুরানো বন্ধুর সঙ্গে বলা হয়— আরে তুমি? কেমন আছো?
আর স্কুল লেভেলের বন্ধুর সঙ্গে দেখা হলে— একজন আরেকজনের উপর ঝাপিয়ে পড়ে— তাই নিয়ম।❞
—হুমায়ূন আহমেদ (হিমুর রূপালী রাত্রি)

১৭#

❝বড় বড় সমস্যার সমাধান অতি সহজেই করা যায়। ছোট ছোট সমস্যার সমাধান করাই কঠিন।❞
—হুমায়ূন আহমেদ (একজন হিমু কয়েকটি ঝিঁ ঝিঁ পোকা)

১৮#

❝রাগলে মানুষের চোখ ছোট হয়ে যায়। আনন্দিত মানুষের চোখ হয় বড় বড়।❞
—হুমায়ূন আহমেদ (হিমুর রূপালী রাত্রি)

১৯#

❝চলে যায় বসন্তের দিন! কী অদ্ভুত কথা। বসন্তের দিন কেন চলে যাবে? কোনো কিছুই তো চলে যায় না। এক বসন্ত যায়, আরেক বসন্ত আসে। স্বপ্ন চলে যায়, আবারো ফিরে আসে।❞
—হুমায়ূন আহমেদ (চলে যায় বসন্তের দিন)

২০#

“বন্ধুত্ব তখনই গাঢ় হয় যখন কেউ কাউকে চিনে না।” ~ হিমু এবং হার্ভার্ড পিএইচ.ডি বল্টু ভাই, হুমায়ূন আহমেদ

২১#

“হিমুর প্রতিটি কথা ভুয়া। সত্যি কথা সে অতীতে কোনোদিন বলেনি। ভবিষ্যতেও বলবে না।”
~সে আসে ধীরে, হুমায়ূন আহমেদ

২২#

“আমার সঙ্গে কি আছে জানিস? পদ্ম। নীলপদ্ম। পাচটা নীলপদ্ম নিয়ে ঘুরছি। কি অপূর্ব পদ্ম। কাউকে দিতে পারছিনা। দেয়া সম্বব নয়. হিমুরা কাউকে নীলপদ্ম দিতে পারে না.”
― হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম, হুমায়ূন আহমেদ

২৩#

“হিমু ভাই!”বল”যাবার আগে আপনি কি বলে যাবেন আপনি কে?’ আমি বললাম, ‘মারিয়া, আমি কেউ না. I am nobody.’ আমি আমার এক জীবনে অনেককে এই কথা বলেছি – কখনো আমার গলা ধরে যায়নি, বা চোখ ভিজে অঠেনি। দুটা ব্যাপারী এই প্রথম ঘটল.”
― হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম, হুমায়ূন আহমেদ

২৪#

“ঝর বৃষ্টির রাত হলেই এলিটা আমার সঙ্গে পক্খিমানবের সন্ধানে বের হয়.মানব জাতির সমস্যা হচ্ছে তাকে কোনো না কোনো সন্ধানে জীবন কাটাতে হয়. অর্থের সন্ধান, বিত্তের সন্ধান, সুখের সন্ধান, ভালবাসার সন্ধান, ইশ্বরের সন্ধান।আমি আর এলিটা সন্ধান করছি সামান্য পক্খিমানবের।”
― হিমু এবং একটি রাশিয়ান পরী, হুমায়ূন আহমেদ

২৫#

“কয়েক মুহুর্তের জন্যে আমার ভেতর এক ধরনের বেভ্রম তৈরী হল. মনে হল আমার আর হাটার প্রয়োজন নেই. মহাপুরুষ না, সাধারণ মানুষ হয়ে মমতাময়ী এই তরুনিতির পাশে এসে বসি. যে নীলপদ্ম হাতে নিয়ে জীবন শুরু করেছিলাম, সেই প্দ্ম্গুলি তার হাতে তুলে দেই. তারপরেই মনে হলো – এ আমি কি করতে যাচ্ছি! আমি হিমু – হিমালয়।”
― হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম, হুমায়ূন আহমেদ

২৬#

“সঙ্গে সঙ্গে আমার মনে হলো, আসাদুল্লাহ সাহেবের নীলপদ্ম থিউরি ঠিক আছে. এই তরুণী তার সমস্ত নীলপদ্ম হিমু নামের এক ছেলের হাতে তুলে দিয়ে তীব্র কষ্ট ও যন্ত্রণার ভেতর বাস করছে। এই যন্ত্রণা, এই কষ্ট থেকে তার মুক্তি নেই.”
― হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম, হুমায়ূন আহমেদ

২৭#

এই সব কথা রুপাকে বলার কোনো অর্থ হয় না. বরং কোনো-কোনো দিন তরঙ্গিনী স্টোর থেকে টেলিফোন করে বলি – রুপা, তুমি কি এক্ষুনি নীল রঙের একটা সারি পরে তোমাদের ছাদে উঠে কার্নিশ ধরে নিচের দিকে তাকাবে? তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছা করছে। একটুখানি দাড়াও। আমি তোমাদের বাসার সামনের রাস্তা দিয়ে হেটে চলে যাব.আমি জানি রুপা আমার কথা বিশাস করে না, তবুও যত্ন করে সারি পরে. চুল বাধে। চোখে কাজলের ছোয়া লাগিয়ে কার্নিশ ধরে দাড়ায়। সে অপেক্ষা করে. আমি কখনো যাই না.আমাকে তো আর দশটা ছেলের মত হলে চলবে না. আমাকে হতে হবে অসাধরণ।আমি সারাদিন হাটি। আমার পথ শেষ হয় না. গন্তব্যহীন যে যাত্রা তার কোনো শেষ থাকার তো কথাও নয়.”
― ময়ূরাক্ষী, হুমায়ূন আহমেদ

২৮#

আমার খুব শখ বড় রকমের ঝামলায় পড়লে সে কি করে। কাজেই হিমুর জন্য বড় ধরনের একটা সমস্যা আমি তৈরি করেছি। এবং খুব আগ্রহ নিয়ে তার কান্ড-কারখানা দেখেছি।”
― একজন হিমু কয়েকটি ঝিঁ ঝিঁ পোকা, হুমায়ূন আহমেদ

২৯#

“মেয়েদের অনেক গুণের মধ্যে বড় গুণ হলো এরা খুব সুন্দর করে চিঠি লিখতে পারে। কথাবার্তায় নিতান্ত এলোমেলো মেয়েও চিঠি লেখায় গোছানো। মেয়েদের চিঠিতে আরেকটা ব্যাপার থাকে – বিষাদময়তা। নিতান্ত আনন্দের সংবাদ দিয়ে লেখা চিঠির মধ্যেও তারা জানি কী করে সামান্য হলেও দুঃখ মিশিয়ে দেয়। কাজটা যে তারা ইচ্ছা করে করে তা না। প্রকৃতি তাদের চরিত্রে যে বিষাদময়তা দিয়ে রেখেছে তাই হয়তো চিঠিতে উঠে আসে।”
― সে আসে ধীরে, হুমায়ূন আহমেদ

৩০#

“হাসিতে খুব সহজেই মানুষকে চেনা যায়। সব মানুষ একই ভঙ্গিতে কাঁদে কিন্তু হাসার সময় একেক জন একেক রকম করে হাসে।”
― ময়ূরাক্ষী, হুমায়ূন আহমেদ

৩১#

“বিবাহ এবং মৃত্যু এই দুই বিশেষ দিনে লতা-পাতা আত্মীয়দের দেখা যায়। সামাজিক মেলামেশা হয়। আন্তরিক আলাপ আলোচনা হয়।
—একজন হিমু কয়েকটি ঝিঁ ঝিঁ পোকা, হুমায়ূন আহমেদ

৩২#

“মানুষের স্বভাব হলো, কেউ যখন ভালোবাসে তখন নানান কর্মকাণ্ড করে সেই ভালোবাসা বাড়িয়ে দিতে ইচ্ছে করে, আবার কেউ যখন রেগে যায় তখন তার রাগটাও বাড়িয়ে দিতে ইচ্ছা করে।”
—আঙ্গুল কাটা জগলু, হুমায়ূন আহমেদ

Leave a Reply