You are currently viewing শিবরাম চক্রবর্তী উক্তি : শিবরাম চক্রবর্তীর ২৫ টি হাস্যরসাত্মক উক্তি

শিবরাম চক্রবর্তী উক্তি : শিবরাম চক্রবর্তীর ২৫ টি হাস্যরসাত্মক উক্তি

শিবরাম চক্রবর্তী (ডিসেম্বর ১৩, ১৯০৩-আগস্ট ২৮, ১৯৮০) ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি রম্যলেখক। কবিতা-রচনা দিয়ে তাঁর সাহিত্য-জীবনের শুরু।

প্রথম কবিতা বেরোয় ভারতী পত্রিকায়। প্রথম প্রকাশিত বই দুটিও — ‘মানুষ’ ও ‘চুম্বন’ — কবিতার। দুটিই প্রকাশিত হয় ১৯২৯ সালে। তারপর অজস্র লেখা লিখেছেন। প্রবন্ধ, নাটক এবং তুলনাহীন অজস্র হাসির গল্প। লিখেছেন ঈশ্বর পৃথিবী ভালবাসা ও ভালবাসা পৃথিবী ঈশ্বর নামের অনন্য স্মৃতিকথামূূলক দূটি বই। প্রবন্ধের বই : মস্কো বনাম পন্ডিচেরি ও ফানুস ফাটাই। নাটকের গ্রন্থ : যখন তারা কথা বলবে। বিচিত্র জীবন ছিল তার। রাজনীতি করেছেন, জেল খেটেছেন, রাস্তায় কাগজ ফেরি করেছেন, ফুটপাথে রাত্রিবাস করেছেন, সাংবাদিকতা করেছেন, আজীবন মেস-জীবন যাপন করেছেন।

১#

আইবুড়ো ছেলেমেয়েরা বিয়েবাড়িতে খেতে গেলেই শোনে , ‘ কি রে ? তোরটা করে খাবো? ‘ এই কারণে বুড়োরা সাধারণত শ্রাদ্ধবাড়ি খেতে যায় না।


২#

ট্রেনে এক ঘুমন্ত সহযাত্রীকে শুধোলাম, কোথায় নামবেন?
ভদ্রলোক চোখ খুলে বিরক্তভাবে বললেন, শিয়াল।
শিয়াল?
শিয়ালদা বলুন। আমি বললাম। ভদ্রলোক একটু হাসলেন, শিয়াল আপনাদের চেয়ে বড় কিন্তু আমার চেয়ে ছোট কিনা।

( অল্পবিস্তর ~ শিবরাম চক্রবর্তী )

৩#

বহুবছরের কঠিন পরিশ্রমের পর আমি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে নতুন বছর নতুন বছর বলে খুব হইচই করার কিছু নেই। যখনই কোন নতুন বছর এসেছে তাহা এক বছরের বেশী টেকেনি।


৪#

প্রথমে ভেবেছিলাম যে মন্দির বানাবো। তারপর ভেবে দেখলাম, সেখানে কেবল হিন্দুরাই আসবে, মুসলমান ক্রিশ্চান এরা কেউ ছায়া মাড়াবে না তার। মসজিদ গড়লেও মুসলমান ছাড়া আর কেউ ঘেঁষবে না তার দরজায়। গির্জা হলেও তাই। যাই করতে যাই, সর্বধর্মসমন্বয় আর হয় না। তা ছাড়া পাশাপাশি মন্দির মসজিদ গির্জা গড়লে একদিন হয়তো মারামারি লাঠালাঠিও বেঁধে যেতে পারে। তাই অনেক ভেবেচিন্তে এই পায়খানাই বানিয়েছি। সবাই আসছে এখানে। আসবে চিরদিন।

৫#

ছোটবেলায় সকলেই খুব চালাক চতুর থাকে কিন্তু যতই বড় হতে থাকে, চারধারের ধাক্কা খেয়েই হয়ত বা, ততই আরো ভোঁতা হয়ে যায় কেমন। নিতান্ত বোকা কিম্বা অতিবুদ্ধি হয়ে বুদ্ধিজীবী হয়ে বুদ্ধ হয়ে যায় বোধ হয়।


৬#

স্ত্রীর কাছে বীর কেউই নয়, বিশেষত খাবারঘরে। বড় বড় বক্তৃতা-বাজ ও ভাতের গ্রাস মুখে তুলে নীরবে অপর পক্ষের বাক্যবাণ হজম করে, করতে বাধ্য হয়।

৭#

“বন্ধু পাওয়া যায় সেই ছেলেবেলায় স্কুল-কলেজেই। প্রাণের বন্ধু। তারপর আর না।
আর না?
সারা জীবনে আর না। জীবন জুড়ে যারা থাকে তারা কেউ কারো বন্ধু নয়। তারা দু’রকমের; এনিমি আর নন-এনিমি। নন-এনিমিদেরই বন্ধু বলে ধরতে হয়।”
—শিবরাম চক্রবর্তী


৮#

ভালোর ভালো বলে এই দুনিয়ায় কিছুই তো নাই। মন্দের ভালোই সত্যিকারের ভালো। তাই নিয়েই খুশি থাকতে হয়।

~ঈশ্বর পৃথিবী ভালবাসা- শিবরাম চক্রবর্তী

৯#

কোন মেয়েরই উপযুক্ত আমি নিজেকে জ্ঞান করিনি কখনো। ভেবে দেখলে এদেশের বেশির ভাগ মেয়েরই বেশ দুঃখের জীবন। এদের একটিকে অন্তত আমি সুখী করতে চেয়েছিলাম আমার জীবনে ( তাকে বিয়ে না করে )।

১০#

প্রেরণার আদায়ে নয়, প্রাণের দায়ে আমার লেখা। গায়ে জোর নেই বলে রিকশা টানতে পারি না, তার বদলে এই কলম টানি। কলমের ওপর টান আমার অতটুকুই।

১১#

যারা বেঁচে আছেন তাদের সম্পর্কে কিছু না বলাই ভালো। একজনের সম্পর্কে ভালো কথা বলে আর একজনের ভালোবাসা হারাতে আমি রাজি নই। কখন কাছ থেকে টাকা ধার করতে হয়!




১২#

“ভেবে দেখলে, প্রেমের ফাঁদ তো চারধারেই
পাতা–ভূমণ্ডলের কোথায় নেই? যথাস্থানে
আর উপস্থিত মুহূর্তে, বোকার মত, ধরা দিলেই
হয়।”

~ ভালবাসার অ আ ক খ – শিবরাম চক্রবর্তী

১৩#

“যতগুলো বাংলা বানান নির্ভুল আমার জানা ছিল,ওদের পড়াতে পড়াতে তার প্রায় সমস্তটাই আমি ভুলে গেলাম। এক-একটা শব্দের যে কতদূর সম্ভাবনা আছে, কতগুলো বানান হতে পারে, তা একজামিনের খাতা না দেখলে জানা যায় না।

~ শিক্ষালাভ #শিবরাম চক্রবর্তী


১৪#

“ছেলেদের মেয়েলিপনা অসহনীয় বােধ হলেও মেয়েদের মধ্যে ছেলে ছেলে ভাবটা আনকোরা এক আকর্ষণ মনে হয়।”

~ ঈশ্বর পৃথিবী ভালবাসা শিবরাম চক্রবর্তী

১৫#

আর মেয়েদের তাে এমনিতেই কথার বাঁধুনি। স্বভাবতই তারা নভেলটি সর্বদাই। কোনাে রােমান্স কাহিনী না পড়েও তারা রােমান্টিক। আজন্ম নায়িকা। মুহুর্মুহু রােমাঞ্চকর।

~ইশ্বর পৃথিবী ভালবাসা, শিবরাম চক্রবর্তী


১৬#

ভালবাসা ? তার পরিচয় কাউকে বোধ হয় চেষ্টা করে পেতে হয় না , সে নিজেই আগ বাড়িয়ে জানান দিয়ে থাকে । এই একটি বস্তু , যা কারোর দ্বারা কিছুতেই লভ্য নয় , ( পাওয়াও যায় না বোধ হয় ) নিজগুণে আপনার থেকে অযাচিত এসে ধরা দেয়।

~ঈশ্বর পৃথিবী ভালবাসা- শিবরাম চক্রবর্তী

১৭#


“যেতে দাও, পরচর্চায় লাভ কী? ওসব পরে
কথায় পরীর কথায় আমাদের কাজ কি
ভায়া।”

(ভালবাসার অ আ ক খ – শিবরাম চক্রবর্তী)


১৮#

ব্যক্তিত্ব বস্তুটা হচ্ছে কারও কারও সহজাত, জন্ম থেকেই পাওয়া, আবার কাউকে কাউকে চেষ্টার দ্বারা অর্জন করতে হয়।

(ব্যক্তিত্বের অভিব্যক্তি – শিবরাম চক্রবর্তী)

১৯#

পাপ পূণ্য কোনোটাই তো করার সুযোগ পেলাম না। সারাজীবন কেবল ঘুমিয়েই কাটিয়ে দিলাম। ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কি আর ওসব করা যায়?



২০#

এম্বুলেন্সে চাপা পড়ার মতো বরাত বুঝি আর হয় না। যাতে চাপা পড়লাম তাতেই চেপে হাসপাতালে চলে গেলাম।


২১#

কুকুরে মানুষ কামড়ালে সংবাদ হয় না, মানুষে কুকুর কামড়ালেই তবে সংবাদ- তখন বুঝতে হবে দেশে চরম দুর্ভিক্ষ চলছে।

২২#

একদম কিছু না জানার এই তো মজা- কিছুই না জেনেও স্বচ্ছন্দে সবজান্তা হওয়া যায়।


২৩#

সবাই জানে সকলের জন্যেই তিনটে করে সকালের ট্রেন, দুনিয়ার সব জায়গাতেই। একটা সে ধরতে চায় (আমার ক্ষেত্রে যেটা সাতটা পঞ্চান্নর) , একটা সে ধরতে গিয়ে একটর জন্য ফেল করে (আমার ক্ষেত্রে যেটা আটটা চোদ্দর) , আর একটায় সে শেষপর্যন্ত যায় (আমার ক্ষেত্রে যেটা আটটা তেইশের)।


২৪#

যদি কোনও মেয়ের ষোল আনা আপনি পেতে চান তো বিনিময়ে তাকে ষোল আনাই দিতে হবে- তার চেয়ে এক আনা পেয়ে খুশি থাকা কি ভালো না? শত শত একানি গেলে মোটমাট কতখানি দাড়ায় ভেবে দেখুন একবার।

২৫#

পৃথিবীতে বড় বয়সে বন্ধু বলে কিছু হয় না। বন্ধু হয় সেই ছোটবেলায় স্কুল-কলেজে পড়বার সময়। তারপর হয় এনিমি অথবা নন-এনিমি। এই নন-এনিমিদেরই আমরা বন্ধু বলে ধরি।

Leave a Reply