You are currently viewing রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ২৫ টি বিখ্যাত কবিতার পঙক্তি

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ২৫ টি বিখ্যাত কবিতার পঙক্তি

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ লেখক। তিনি তার সাহিত্য জীবনে অসংখ্য কবিতা রচনা করেছেন। সেই সকল কবিতা থেকে বাছাই করা কিছু অসাধারণ কবিতার লাইন তুলে ধরার চেষ্টা করেছি এই ব্লগে।

১#

চন্দ্রের যা কলঙ্ক সেটা কেবল মুখের উপরে,
তার জ্যোৎস্নায় কোনো দাগ পড়ে না।


২#

“ প্রেমের আনন্দ থাকে স্বল্পক্ষণ
কিন্তু বেদনা থাকে সারাটি জীবন॥ ”






৩#

“নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিশ্বাস,
ওপারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস।
নদীর ওপার বসি দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে;
কহে, যাহা কিছু সুখ সকলি ওপারে।”





৪#

“রাতের সব তারাই আছে
দিনের আলোর গভীরে।”




৫#

“যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে
তবে একলা চলো রে।”





৬#


“চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির,
জ্ঞান যেথা মুক্ত, যেথা গৃহের প্রাচীর
আপন প্রাঙ্গণতলে দিবস শর্বরীব
সুধারে রাখে নাই খন্ড ক্ষুদ্র করি।”





৭#


“আমাদের গেছে যে দিন
একেবারেই কি গেছে,
কিছুই কি নেই বাকি।”


৮#



ছোট ছোট মুখ জানে না ধরার দুখ,
হেসে আসে তোমাদের দ্বারে।
নবীণ নয়ন তুলি কৌতুকেতে দুলি দুলি
চেয়ে চেয়ে দেখে চারিধারে।



৯#




যায় যদি লুপ্ত হয়ে
থাকে শুধু থাক
এক বিন্দু নয়নের জল
কালের কপোল তলে
শুভ্র সমুজ্জ্বল এ তাজমহল।



১০#




মানুষ পণ করে
পণ ভাঙিয়া ফেলিয়া
হাঁফ ছাড়িবার জন্য।


১১#



বসন্তকালের ঝড়ে যখন রাশি রাশি আমের বোল ঝরিয়া পড়ে তখন সে বোলগুলি কেবলই মাটি হয়, তাহা হইতে গাছ বাহির হইবার কোনো সম্ভাবনা থাকে না। তেমনি দেখা গেছে, সংসারে উপদেশের বোল অজস্র বৃষ্টি হয় বটে, কিন্তু অনেক স্থলেই তাহা হইতে অঙ্কুর বাহির হয় না, সমস্ত মাটি হইতে থাকে।




১২#





মানুষ যে কেবল নিজের মধ্যে আছে তা নয়, সকলে তাকে যা জানে সে জানার মধ্যেও সে অনেকখানি আছে। … তাই ‘আপনাকে জানো’ এই কথাটা শেষ কথা নয়, ‘আপনাকে জানাও’ এটাও খুব বড়ো কথা।


১৩#



আমাদের আত্মার মধ্যে অখণ্ড ঐক্যের আদর্শ আছে।
আমরা যা কিছু জানি কোনো না কোনো ঐক্যসূত্রে জানি।
কোনো জানা আপনাতেই একান্ত স্বতন্ত্র নয়।
যেখানে দেখি আমাদের পাওয়া বা জানার অস্পষ্টতা
সেখানে জানি,মিলিয়ে জানতে না পারাই তার কারণ।




১৪#




মানুষের মধ্যে দ্বিজত্ব আছে;
মানুষ একবার জন্মায় গর্ভের মধ্যে,
আবার জন্মায় মুক্ত পৃথিবীতে।
…মানুষের এক জন্ম আপনাকে নিয়ে,
আর-এক জন্ম সকলকে নিয়ে।


১৫#




ক্ষুদ্রকে লইয়াই বৃহৎ,
সীমাকে লইয়াই অসীম,
প্রেমকে লইয়াই মুক্তি।
প্রেমের আলো যখনই পাই
তখনই যেখানে চোখ মেলি
সেখানেই দেখি,
সীমার মধ্যে সীমা নাই।





১৬#



আমরা যখন মিথ্যাপথে চলি,
তখন আমরা দুর্বল হইয়া পড়ি ।
এইজন্য তখন আমরা আত্মহত্যা করি।
তখন আমরা একেবারে আমাদের মূলে আঘাত করি।
আমরা যাহার উপরে দাঁড়াইয়া আছি
তাহাকেই সন্দেহ করিয়া বসি।

১৭#


আছে দু:খ, আছে মৃত্যু, বিরহদহন লাগে।
তবুও শান্তি, তবু আনন্দ, তবু অনন্ত জাগে…




১৮#




অপর ব্যাক্তির কোলে পিঠে চড়িয়া অগ্রসর হওয়ার কোন মাহাত্ম্য নাই –
কারণ চলিবার শক্তিলাভই যথার্থ লাভ, অগ্রসর হওয়া মাত্র লাভ নহে।



১৯#




সীমা আছে এ কথা যেমন নিশ্চিত,
অসীম আছেন এ কথা তেমনি সত্য।
আমরা উভয়কে যখন বিচ্ছিন্ন করিয়া দেখি
তখনি আমরা মায়ার ফাঁদে পড়ি।
তখনি আমরা এমন একটা ভুল করিয়া বসি যে,
আপনার সীমাকে লঙ্ঘন করিলেই বুঝি আমরা অসীমকে পাইব –
যেন আত্মহত্যা করিলেই অমরজীবন পাওয়া যায়।
যেন আমি না হইয়া আর-কিছু হইলেই আমি ধন্য হইব।
কিন্তু, আমি হওয়াও যা আর-কিছু হওয়া যে তাহাই, সে কথা মনে থাকে না।
আমার এই আমির মধ্যে যদি ব্যর্থতা থাকে
তবে অন্য কোনো আমিত্ব লাভ করিয়া তাহা হইতে নিষ্কৃতি পাইব না।
আমার ঘটের মধ্যে ছিদ্র থাকাতে যদি জল বাহির হইয়া যায়,
তবে সে জলের দোষ নহে।
দুধ ঢালিলেও সেই দশা হইবে, এবং মধু ঢালিলেও তথৈবচ।




২০#




কাব্যরস আস্বাদনে পাঠকদের অত্যন্ত বেশি যত্নে পথ দেখিয়ে চলা স্বাস্থ্যকর নহে।
নিজে নিজে সন্ধান করা ও আবিষ্কার করা সত্যকার আনন্দ।




২১#

যুক্তির একটা ব্যাকরণ আছে,
অভিধান আছে,
কিন্তু আমাদের রুচির
অর্থাৎ সৌন্দর্যজ্ঞানের আজ পর্য্যন্ত একটা ব্যাকরণ তৈয়ারি হইল না।
তাহার প্রধান কারণ,
সে আমাদের হৃদয়ের মধ্যে নির্ভয়ে বাস করিয়া থাকে –
এবং সে দেশে “কেন” –
আদালতের ওয়ারেন্ট জারি হইতে পারে না।




২২#




চিরকাল কোন্‌ জিনসটা
থাকবে না – থাকবে
তা কেউ বলতে পারে না
এবং আমিও সে সমন্ধে কোনোরকম
তর্কবিতর্ক করতে চাই নে –
নিজের মনের ভিতরে যখন
একটা সফলতার আনন্দ অনুভব করা যায়
সেইটেই লেখকের পক্ষে যথার্ত অমরতা।
দুর্ভাগ্যক্রমে সে আনন্দ খুব ভালো লেখক
থেকে খুব খারাপ লেখক পর্যন্ত
প্রায় সকলে ন্যূনধিক পরিমাণে অনুভব করে।



২৩#




যৌবনের শেষে শুভ্র শৎরকালের ন্যায়
একটি গভীর প্রশান্ত প্রগাঢ় সুন্দর বয়স আসে
যখন জীবনের শেষে ফল ফলিবার
এবং শস্য পাকিবার সময়।



২৪#




সামনে একটা পাথর পড়লে
যে লোক ঘুরে না গিয়ে সেটা
ডিঙ্গিয়ে পথ সংক্ষেপ করতে চায় –
বিলম্ব তারই অদৃষ্টে আছে।



২৫#




ধর্ম যারা সম্পূর্ণ উপলব্ধি না করিয়া প্রচার করিতে চেষ্টা করে
তহারা ক্রমশই ধর্মকে জীবন হইতে দূরে ঠেলিয়া থাকে।
ইহারা ধর্মকে বিশেষ গন্ডি আঁকিয়া একটা বিশেষ সীমানার মধ্যে আবদ্ধ করে।


২৬#





মানুষ এক দিকে মৃত্যুর অধিকারে,
আর-এক দিকে অমৃতে;
এক দিকে সে ব্যক্তিগত সীমায়,
আর-এক দিকে বিশ্বগত বিরাটে।
এই দুয়ের কোনোটাকেই উপেক্ষা করা চলে না।



Leave a Reply