You are currently viewing পুতুল নাচের ইতিকথা উপন্যাসের উক্তি : ৩০ টি বিখ্যাত উক্তি

পুতুল নাচের ইতিকথা উপন্যাসের উক্তি : ৩০ টি বিখ্যাত উক্তি

পুতুল নাচের ইতিকথা উপন্যাসটি শুরু হয়েছে বজ্রাঘাতে নিহত হারু ঘোষের বর্ণনা দিয়ে:
“খালের ধারে প্রকাণ্ড বটগাছের গুঁড়িতে ঠেস দিয়া হারু ঘোষ দাঁড়াইয়া ছিল। আকাশের দেবতা সেইখানে তাহার দিকে চাহিয়া কটাক্ষ করিলেন। হারুর মাথায় কাঁচা-পাকা চুল আর বসন্তের দাগভরা রুক্ষ চামড়া ঝলসিয়া পুড়িয়া গেল। সে কিন্তু কিছুই টের পাইল না।”
উপন্যাসটির কেন্দ্রীয় চরিত্র গ্রামের ডাক্তার শশী। ঈশ্বরের প্রতি তার বিশ্বাস নেই। গ্রামের পটভূমিতে শশী, শশীর পিতা, কুসুম-সহ অন্যান্য চরিত্রগুলোর মাঝে বিদ্যমান জটিল সামাজিক সম্পর্ক নিয়ে গড়ে উঠেছে এর কাহিনী ও প্রেক্ষাপট। ক্ষয়িষ্ণু সমাজের প্রেম, বিরহ, দ্বেষ ও পারস্পরিক সহমর্মিতা কে উপজীব্য করে লেখা এই উপন্যাস বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্পদ।

এই ব্লগ পোস্টে পুতুল নাচের ইতিকথা উপন্যাসের বিখ্যাত সকল উক্তিগুলো তুলে ধরা চেষ্টা করেছি।

১#

গ্রামের লোক ভয় করিতে ভালোবাসে।

২#

মৃত্যু এক-একজনকে এক-একভাবে বিচলিত করে।

৩#

গ্রামের কলঙ্ক রটানোর কাজে উৎসাহী নিষ্কর্মা ব্যক্তির সংখ্যা এত বেশি যে, এতটুকু এদিক ওদিক হইলে গ্রামের বৌ-ঝিদের কলঙ্ক দিগদিগন্তে রটিয়া যায়।

৪#

লোকের অভাব কি? এ হল বাংলাদেশ, একজন রোজগার করে, দশজন খায়।

৫#

গ্রামে পর্দা প্রথা শিথিল কিন্তু সে গ্রামেরই চেনা মানুষের জন্য।

৬#

শীতলবাবুদের বাড়ির মেয়েরা গায়ে সিল্কের ব্লাউজ দেয়, বোম্বাই শাড়ি পরে। শীতলবাবুর ভাই কলিকাতা-প্রবাসী বিমলবাবুর স্ত্রী-কন্যারা পায়ে জুতাও দিয়া থাকে। দু’ভাইয়ের পরিবার নারীর সংখ্যাও কি কম!

৭#

সংসারে যেখানে যত টাকা সেখানে তত নারী, সেখানে তত রূপ।

৮#

মনে পাপ থাকার এই একটা লক্ষন। মনে হয়, সকলে বুঝি সব জানে।

৯#

সাপ উঠিয়াপড়ার আশঙ্কায় কেঁচো খুঁড়িবার চেষ্টাতেও মানুষ ইতস্তত। আকাশে চাঁদ ওঠে, সূর্য ওঠে। পৃথিবীটা চিরকাল ঈশ্বরের রাজ্য। মানুষের এই বদ্ধমূল সংস্কার সহজে যাইবার নয়। হাজার পাপ করিলেও নয়।

১০#

গ্রামের লোকের অনুমানশক্তি প্রখর। সকালে আকাশের দিকে চাহিয়া তাহারা বলিতে পারে বিকালে বৃষ্টি হইবে।বিকালে যদি নেহাত বৃষ্টি না-ই হয় সে অপরাধ অবশ্য আকাশের।

১১#

শীতকালটা গ্রামের লোক সুখে কাটায়।

১২#

শসী পৃথিবীতে আসিয়াছিল উলঙ্গ সন্ন্যাসী হইয়া,এখন সে ডাক্তার।

১৩#

যাদের বয়স কম ও স্বামী আছে তারা ভাবে, আমাদের মতো রাত জাগতে হলে দুপুরে ঘুমোই কেন বুঝতে! যাদের স্বামী নাই, তারা ভাবে দুপুরবেলা না ঘুমিয়ে করব কি? সময় কাটবে কি করে?

১৪#

দুপুরে না ঘুমুলে অম্বলের জ্বালা বোধহয় একটু কমে।

১৫#

স্ত্রীকে মানুষ নিজের খুশিমতো অবস্থায় রাখিবে এই তো সংসারের নিয়ম।

১৬#

ছেলে বড় হইলে কি কঠিন হইয়া দাঁড়ায় তার সঙ্গে মেশা। সে বন্ধু নয়, খাতক নয়,উপরওয়ালা নয়,কি সম্পর্ক দাঁড়ায় বয়স্ক ছেলের সঙ্গে মানুষের,ভগবান জানেন।

১৭#

ঠিকমতো বাঁচতেই জানি না, কবিতা লিখব! লিখতে লজ্জা করে।

১৮#

সংসারে জানেন, ছোটবাবু, যেচে মায়া করতে গেলে পদে পদে অপমান হতে হয়।

১৯#

সত্যি মিথ্যায় জড়ানো জগৎ। মিথ্যারও মহত্ত্ব আছে। হাজার হাজার মানুষকে পাগল করিয়া দিতে পারে মিথ্যার মোহ। চিরকালের জন্য সত্য হইয়াও থাকিতে পারে মিথ্যা।

২০#

বাপের বাড়ি যেতে না পেলে মেয়েমানুষের মাথা বিগড়ে যায়।

২১#

টাকার জন্য কখনো মানুষের বেঁচে থাকা আটকায় না।

২২#

সংসারে মানুষ চায় এক, হয় আর, চিরকাল এমনি দেখে আসছি ডাক্তারবাবু। পুতুল বৈ তো নই আমরা, একজন আড়ালে বসে খেলাচ্ছেন।

২৩#

মেয়ে মানুষ এরকম হয়, ওরকম হয়, সব রকম হয়, শুধু মনের মতো হয় না।

২৪#

চিরদিন কি একরকম যায়? মানুষ কি লোহায় গড়া, যে চিরকাল সে এরকম থাকবে, বদলাবে না? বলতে বসেছি যখন কড়া করেই বলি, আজ হাত ধরে টানলেও আমি যাব না।

২৫#

লোকের মুখে মন ভেঙে যাবার কথা শুনতাম,অ্যাদ্দিনে বুঝতে পেরেছি সেটা কি।

২৬#

ঘরে আগুন লাগিলে আগুন নেভে-বাহিরেরও,মনেরও।

২৭#

মানুষ যে মরিয়া বাঁচে না কি তার প্রমাণ আছে? শীতকালের বর্ষায় কখনো কি মরা নদীতে বান ডাকে না?

Leave a Reply