পরিণীতা শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রেমের উপন্যাস। বিংশ শতাব্দীর প্রথম সময়ের ভারতের কলকাতার পটভূমিতে রচিত এই উপন্যাস। আমাদের অতিপরিচিত প্রাত্যহিক সুখ-দুঃখের জীবনকে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এমন কৌশলে পাঠকদের সামনে হাজির করেন যে পাঠক নিজের অজান্তেই সেই জীবনের সহযাত্রী হয়ে উঠে। এমনই একটি উপন্যাস ‘পরিণীতা’, যার মূল বিষয়বস্তু হলো যন্ত্রণাকাতর দুঃসহ কেরানিজীবন। ষাট টাকা মাসিক বেতনের কন্যাদায়গ্রস্ত অসহায় ব্যাংক-কেরানি গুরুচরণের জীবনকাহিনী চিত্রিত হয়েছে উপন্যাসটিতে। এছাড়াও রয়েছে ললিতা, শেখর আর গিরিনের সম্পর্কের টানাপোড়েন, যার মাধ্যমে লেখক মানবমনের ইন্দ্রিয়বৃত্তের দ্বন্দ্বের রূপ দেখিয়েছেন।
শরৎচন্দ্র এখানে ঘটিয়েছেন ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্র, সমাজ ও সমকালকে ধারণ করা এমনি এক চিত্রায়ণ, যা সহজেই পাঠক এবং সমালোচককে আকৃষ্ট করে।
পরিণীতা উপন্যাসের কিছু অসাধারণ উক্তি বা লাইন থাকছে এই ব্লগ পোস্টে।
১#
এমন সমাজ থেকে জাত যাওয়াই মঙ্গল। খাই না খাই, শান্তিতে থাকা যায়। যে সমাজ দুঃখীর দুঃখ বোঝে না, বিপদে সাহস দেয় না, শুধু চোখ রাঙায় আর গলা চেপে ধরে সে সমাজ আমার নয়, আমার মতো গরিবেরও নয়- এ সমাজ বড়োলোকের জন্যে। ভালো, তারাই থাক, আমাদের কাজ নাই।
২#
সমাজ বলছে মেয়ের বিয়ের বয়স হয়েছে বিয়ে দাও কিন্তু দেবার বন্দোবস্ত করে তো দিতে পারেন না।
৩#
মানুষ নিঃশব্দে যে কতবড়ো স্বার্থত্যাগ করিতে পারে, হাসিমুখে কি কঠোর প্রতিশ্রুতি পালন করিতে পারে তাহা আজ সে প্রথম দেখিল।
৪#
দু’দিন পর ছেলে মেয়ের হাত ধরে গিয়ে যখন পথে দাঁড়াতে হবে তখন সমাজ বলবে না, এসো আমার বাড়িতে আশ্রয় নাও।
৫#
এই ভালোবাসা ঘরের দেয়ালে দেয়ালে ছড়িয়ে পড়েছিল, কিন্তু মুখে কেউ কোনোদিন বলেনি।
৬#
ভালোবেসে সবারে আমি চাই না হতে জয়,
ভালোবেসে হার মানাতে সাধ জাগে মোর হৃদয়।