বাংলা সাহিত্যে বঙ্কিমচন্দ্রের ‘কৃষ্ণকান্তের উইল’ উপন্যাসটি একটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস। লেখকের চৌদ্দটি কথাসাহিত্যের চারটি সামাজিক উপন্যাসের মধ্যে এটি একটি। রোমান্স, হিংসা, দ্বেষ, মোহ, লোভ, ক্ষোভ, যৌনতা – সব এই উপন্যাসে রয়েছে। আর এজন্যই ‘কৃষ্ণকান্তের উইল’ লাভ করেছে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি। সামাজিক মনস্তাত্ত্বের জটিল সব বিষয়গুলো সুক্ষাতিসুক্ষ ভাবে পাঠকের কাছে তুলে ধরেছেন ঔপন্যাসিক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
এই ব্লগে কৃষ্ণকাম্তের উইল উপন্যাসের উক্তি গুলো তুলে ধরেছি
১#
“যাহাকে ভালবাস, তাহাকে নয়নের আড় করিও না। যদি প্রেমবন্ধান দৃঢ় রাখিবে, তবে সূতা ছোট করিও।
বাঞিতকে চোখে চোখে রাখিও। অদর্শনে কত বিষময় ফল ফলে। যাহাকে বিদায় দিবার সময়ে কত কাঁদিয়াছ, মনে করিয়াছ, বুঝি তাহাকে ছাড়িয়া দিন কাটিবে না,_-কয় বসর পরে তাহার সহিত আবার যখন দেখা হইয়াছে, তখন কেবল জিজ্ঞাসা করিয়াছ-“ভাল আছ ত?”
২#
“এখন তিনিই আমার সম্পত্তি-তিনিই আমার ভ্রমর-ভ্রমরাধিক ভ্রমর।”
৩#
“অদর্শনে কত বিষময় ফল ফলে। যাহাকে বিদায় দিবার সময়ে কত কাঁদিয়াছ, মনে করিয়াছ বুঝি তাহাকে ছাড়া দিন কাটিবে না, কয় বৎসর পরে তাহার সহিত আবার যখন দেখা হইয়াছে, তখন কেবল জিজ্ঞেস করিয়াছ- ভালো আছ তো? হয়তো সে কথাও হয় নাই, কথাই হয় নাই। আন্তরিক বিচ্ছেদ ঘটিয়াছে। হয়তো রাগে, অভিমানে আর দেখাই হয় নাই। তত নাই হউক, একবার চক্ষের বাহির হইলেই, যা ছিলো তাহা আর হয়না। যা যায় তা আর আসে না। যা ভাঙ্গে তা আর গড়ে না। মুক্তবেণীর পর যুক্তবেণী কোথায় দেখিয়াছ?”
~ কৃষ্ণকান্তের উইল (বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়)
৪#
” — আ মরি! কি চোখ! এ কোথা থেকে এল? হলুদ গাঁয়ের লোকত নয়- সেখানকার সবাইকে চিনি। ওর সাথে দুইটি কথা কইতে পাই না? ক্ষতি কি- ”
৫#
এ সংসারে বিশেষ দুঃখ এই যে, মরিবার উপযুক্ত সময়ে কেহ মরে না। অসময়ে সবাই মরে।
৬#
তুমি বসন্তের কোকিল। প্রাণ ভরিয়া ডাক, তাহাতে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু তোমার প্রতি আনুরোধ সময় বুঝিয়া ডাকিবে।
৭#
আমি যাই হই–কৃষ্ণকান্ত রায়ের পুত্র, সে চুরি করিয়াছে তাহাকে কখনো গৃহিনী করিতে পারিব না।”
৮#
লোকে যতটা বলে ততটা নহে। লোকে বলে, আমি সাত হাজার টাকার গহনা পাইয়াছি। মোটে তিন হাজার টাকার গ হনা আর এই শাড়ি খানা (ধার করা) পাইয়াছি।