রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার জীবদ্দশায় সর্বমোট ১৩ টি উপন্যাস রচনা করছেন। উপন্যাসগুলো হচ্ছে বউ ঠাকুরাণীর হাট, রাজর্ষি, চোখের বালি, নৌকাডুবি, প্রজাপতির নির্বন্ধ, গোরা,ঘরে বাইরে, চতুরঙ্গ, যোগাযোগ, শেষের কবিতা, দুই বোন ও চার অধ্যায়।
রবীন্দ্রনাথের সকল উপন্যাসগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সেরা ও অসাধারণ কিছু উক্তি উল্লেখ থাকবে এই ব্লগ পোস্টে।
১#
শিখা একভাবে ঘরের প্রদীপরূপে জ্বলে,
আর একভাবে আগুন ধরাই দেয়।
~ চোখের বালি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
২#
নাম যার বড় তার সংসারটা ঘরে অল্প, বাইরেই বেশি।
~শেষের কবিতা ~ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৩#
অপেক্ষাই জীবন। তার পরে সত্যি একদিন হয়ত কুসুম বনে এসে তরী ঠেকবে।
~নৌকাডুবি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৪#
দুঃখের সান্তনা যে ঈশ্বর কোথায় কত জায়গায় রেখেছেন তা সব সময় জানতে পারিনে বলেই আমরা কষ্ট পাই।
~গোরা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৫#
আশা কহিল, “এসো ভাই, তোমার সঙ্গে একটা কিছু পাতাই।”
বিনোদিনী হাসিয়া কহিল, “কী পাতাইবে।”
আশা গঙ্গাজল বকুলফুল প্রভৃতি অনেকগুলি ভালো ভালো জিনিসের নাম করিল।
বিনোদিনী কহিল, “ও-সব পুরানো হইয়া গেছে; আদরের নামের আর আদর নাই।”
আশা কহিল, “তোমার কোন্টা পছন্দ।”
বিনোদিনী হাসিয়া কহিল, “চোখের বালি।”
শ্রুতিমধুর নামের দিকেই আশার ঝোঁক ছিল, কিন্তু বিনোদিনীর পরামর্শে আদরের গালিটিই গ্রহণ করিল।
বিনোদিনীর গলা ধরিয়া বলিল, “চোখের বালি।” বলিয়া হাসিয়া লুটাইয়া পড়িল।
~চোখের বালি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৬#
কালের ন্যায়বুদ্ধি এখনো সে পরিমাণে বিবেক লাভ করে নি। এখনো অপরাধের যে দণ্ড ত্রুটিরও সেই দণ্ড; উভয়কেই একই জেলের একই ঘানি টানতে হয়। এরকম যে সম্ভব হয়েছে কোনো একজন মানুষকে সেজন্য দোষ দেওয়া যায় না। সমস্ত মানুষের পাপ এজন্য দায়ী।
~ গোরা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৭#
যে আশ্রয় জীর্ণ তাহাকে যতই জোরের সঙ্গে আঁকড়িয়া ধরা যায় তাহা ততই ভাঙিতে থাকে।
~ গোরা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৮#
আমাদের ইচ্ছা যদি অন্যায় ইচ্ছা না হয় এবং সে ইচ্ছা যদি কোনো-একটা সমাজের নিয়মের সঙ্গে আগাগোড়া না মিলে যায় তা হলেই আমাদের মাথা হেঁট করে ফিরে যেতে হবে এ আমি কোনোমতেই বুঝতে পাড়ি নে । সমাজে মিথ্যা ব্যাবহারের স্থান আছে আর স্থান নেই ন্যায় আচরনের ?
~ গোরা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৯#
বিয়ে করলে মানুষকে মেনে নিতে হয়, তখন আর গড়ে নেবার ফাঁক পাওয়া যায় না।
১০#
লোকে ভুলে যায় দাম্পত্যটা একটা আর্ট, প্রতিদিন ওকে নতুন করে সৃষ্টি করা চাই।
১১#
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দূরত্ব কোনটি জানো? নাহ, জীবন থেকে মৃত্যু পর্যন্ত, উত্তরটা সঠিক নয়। সবচেয়ে বড়দূরত্ব হলো যখন আমি তোমার সামনে থাকি, কিন্তু তুমি জানো না যে আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি।
১২#
পৃথিবীতে বালিকার প্রথম প্রেমেরমত সর্বগ্রাসী প্রেম আর কিছুই নাই। প্রথমযৌবনে বালিকা যাকে ভালোবাসে তাহার মত সৌভাগ্যবানও আর কেহই নাই। যদিও সে প্রেম অধিকাংশ সময় অপ্রকাশিত থেকে যায়, কিন্তু সে প্রেমের আগুন সব বালিকাকে সারাজীবন পোড়ায়।
১৩#
স্বামীরা প্রেমিক হতে অবশ্যই রাজি, তবে সেটা নিজের স্ত্রীর সাথে নয় | নিজের স্ত্রীর প্রেমিক হওয়ার বিষয়টা কেন জানি তারা ভাবতেই চায়না।
১৪#
রুপ যখন চোখের পাহারা এড়িয়ে লুকিয়ে অন্তরে দেখা দেয় সেই বুঝি ভালো। তখন সে ভক্তির অমরাবতীতে এসে দাঁড়ায়, সেখানে তাকে কোন সাজ করে আসতে হয় না।
~ ঘরে বাইরে,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
১৫#
প্রেম যে স্বভাব বৈরাগী; সে যে পথের ধারে ধূলার পরে আপনার ফুল অজস্র ফুটিয়ে দেয়। সে ত বৈঠকখানার চীনের টবে আপনার ঐশ্বর্য মেলতে পারে না।
~ ঘরে বাইরে,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
১৬#
কথা কি মুখের কথাতেই শেষ হয়? সমস্ত জীবনে কত কথা শেষ হয় না।
~ ঘরে বাইরে,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
১৭#
জীবনের ট্রাজেডি এখানেই। সে ছোটো হয়ে হৃদয়ের এক তলায় লুকিয়ে থাকে। তারপর বড়কে এক মুহুর্তে কাত করে দেয়। মানুষ আপনাকে যা বলে জানে মানুষ তা নয়। সেই জন্যেই এত অঘটন ঘটে।
~ ঘরে বাইরে,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
১৮#
পুরুষেরা যেখানে দুর্বল মেয়েরা সেখানে তাদের খুব ভালো করে চিনে, কিন্তু পুরুষেরা যেখানে খাটি পুরুষ মেয়েরা সেখানকার রহস্য ঠিক ভেদ করতে পারে না।
~ ঘরে বাইরে,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
১৯#
বিবাহের হাজারখানা মানে। মানুষের সঙ্গে মিশে তার মানে হয়, মানুষকে বাদ দিয়ে তার মানে বের করতে গেলেই ধাঁ ধাঁ লাগে।
~ শেষের কবিতা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
২০#
যে ছুটি নিয়মিত, তাকে ভোগ ক্রয়া আর বাধা পশুকে শিকার করা একই কথা। ওতে ছুটির রস ফিকে হয়ে যায়।
~ শেষের কবিতা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
২১#
মেনে নেওয়া আর মনে নেওয়া, এই দুইয়ের তফাৎ আছে।
~ শেষের কবিতা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
২২#
পৃথিবীতে হয়তো দেখবার যোগ্য লোক পাওয়া যায়, তাকে দেখবার যোগ্য জায়গাটি পাওয়া যায় না।
~ শেষের কবিতা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
২৩#
পুরুষ আধিপত্য ছেড়ে দিলেই মেয়ে আধিপত্য শুরু করবে। দুর্বলের আধিপত্য অতি ভয়ংকর।
~ শেষের কবিতা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
২৪#
পুরুষেরা যেখানে দুর্বল মেয়েরা সেখানে তাদের খুব ভালো করে চিনে, কিন্তু পুরুষেরা যেখানে খাটি পুরুষ মেয়েরা সেখানকার রহস্য ঠিক ভেদ করতে পারে না।
~ শেষের কবিতা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
২৫#
মানুষ তো ফুল কিংবা প্রজাপতি মাত্র নয় যে, ভালো দেখার বিচারটাই সর্বাগ্রে তুলিতে হইবে।
~ নৌকাডুবি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
২৬#
যেখানে নির্ভরতাও নাই, স্বাধীনতাও নাই, সেখানে প্রাণ বাঁচে কী করিয়া।
~ নৌকাডুবি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
২৭#
প্রয়োজন রাজার মতো আপনার পুরা সময় লয়-আর ভালবাসা কাঙ্কাল।
~ নৌকাডুবি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
২৮#
কতকগুলি জিনিস আছে, যা আপনার ঝোকেই অগ্রসর হয়ে পড়ে, তাহাকে আর পশ্রয় দিতে হয় না – বাড়িতে বাড়িতে আপনিই বাড়াবাড়িতে গিয়া পৌছায়।
~ নৌকাডুবি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
২৯#
ভুল হইতে, বেসুর হইতে, অক্ষমতা হইতে আনন্দ পাইবার শক্তি ভালোবাসারই আছে।
~ নৌকাডুবি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৩০#
যে ভালবাসা আপনাকে দেয় তার অধিক আর কিছু দিতে পারে না।
~যোগাযোগ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৩১#
কাঠুরে গাছকে কাটতেই জানে, সে গাছ পায় না, কাঠ পায় । মালী গাছকে রাখতে জানে সে পায় ফুল, পায় ফল
~ যোগাযোগ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৩২#
পূন্য তাতেই বেশি, সেইটেই কঠিন সাধনা।
~ যোগাযোগ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৩৩#
রোগ সব শরীরের দুঃখের কিন্তু ক্ষীন শরীরে মারাত্বক।
~ চার অধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৩৪#
রাগের মাথায় কর্তব্য করতে গেলে অকর্তব্য করার সম্বাবনাই বেশি । কিন্তু রাগের কারণ থাকলে রাগ না করাটা অমানবিক।
~ চার অধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৩৫#
অনেক মানুষ আছে যাদের স্বভাবের দু-রকমের বুনোনির কাজ । দুটোর মধ্যে মিল নেই । অথচ দুটোই সত্য । তারা নিজেকেও নিজে ভুল করে।
~ চার অধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৩৬#
মুর্খেরা লাভ করে উন্নতি, যোগ্য ব্যক্তিরা লাভ করে গৌরব।
~ দুইবোন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৩৭#
যেখানে মেয়েরা দুঃখ পাইবে সেইখানেই তারা ঋদয় দিতে প্রস্তুত।
~ চতুরঙ্গ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৩৮#
যারা নিন্দা করে তারা নিন্দা ভালবাসে বলিয়াই করে, সত্য ভালবাসে বলিয়া নয়।
~ চতুরঙ্গ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৩৯#
নিন্দা করতে গেলে বাইরে থেকে করা যায়, কিন্তু বিচার করতে গেলে ভিতরে প্রবেশ করতে হয়।
~ গোরা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৪০#
পৃথিবীতে যারা মুখ ফুটে নালিশ করতে পারে না, চুপ করে থাকে, তারাই উলটে আসামি হয়।
~ গোরা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর