মহাশ্বেতা দেবী ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি কথাসাহিত্যিক ও মানবাধিকার আন্দোলনকর্মী। তার উল্লেখযোগ্য রচনাগুলি হল হাজার চুরাশির মা, রুদালি, অরণ্যের অধিকার ইত্যাদি। মহাশ্বেতা দেবী ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তীসগঢ় রাজ্যের আদিবাসী উপজাতিগুলির (বিশেষত লোধা ও শবর উপজাতি) অধিকার ও ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করেছিলেন।
তিনি সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার (বাংলায়), জ্ঞানপীঠ পুরস্কার ও র্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার সহ একাধিক সাহিত্য পুরস্কার এবং ভারতের চতুর্থ ও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান যথাক্রমে পদ্মশ্রী ও পদ্মবিভূষণ লাভ করেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাকে পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান বঙ্গবিভূষণে ভূষিত করেছিলেন।
১#
এরা সকলের মতো হতে চায়, শুধু নিজের মতো হতে চায় না। এর নামই ফ্যাশন।”
২#
“কিছুই ফুরোয় না পৃথিবীতে—মুণ্ডারী দেশ-মাটি-পাথর-পাহাড়-বন-নদী-ঋতুর পর ঋতুর আগমন—সংগ্রামও ফুরোয় না, শেষ হতে পারে না। পরাজয়ে সংগ্রাম শেষ হয় না। থেকে যায়, কেননা মানুষ থাকে, আমরা থাকি।”
৩#
সময় শোকের চেয়ে বলশালী। শোক তীরভূমি, সময় জাহ্নবী। সময় শোকের ওপর পলি ফেলে আর পলি ফেলে। তারপর একদিন প্রকৃতির অমোঘনিয়ম অনুযায়ী, সময়ের পলিতে চাপা পড়া শোকের ওপর ছোট ছোট অঙ্কুরের আঙুল বেরোয়। অঙ্কুর। আশার-দুঃখের-চিন্তার-বিদ্বেষের। আঙুলগুলো ওপরে ওঠে, আকাশ খামচায়। সময় সব পারে।
৪#
যারা লেখাপড়া জানে না তারাই শুধু মূর্খ নয়। যারা জানতে বুঝতে চায় না, যারা প্রশ্ন করতে পারে না, যাদের জ্ঞানতৃষ্ণা নেই তারাও মূর্খ।
৫#
সময় ফিরে পাওয়া যায় না। সময় চলে যায় নির্মম, ঘাতক, নিয়তিসমান সময়। সময় জাহ্নবী, শোক বেলাভূমি। সময়ের স্রোতে শোকের ওপর পলিমাটি চাপা পড়ে। তারপর একদিন সেই পলিমাটি ফুঁড়ে নতুন নতুন অঙ্কুরের আঙুল বেরোয়। আঙুলগুলো আকাশপানে আবার উঠতে চায়। আশার, বেদনার, সুখের, আনন্দের অঙ্কুরের আঙুল।