কপালকুণ্ডলা বাংলা ভাষার সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত দ্বিতীয় উপন্যাস। এই উপন্যাস কে বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক রোমান্টিক উপন্যাস মনে করা হয়। উপন্যাসটি ১৮৬৬ খ্রিষ্টাব্দে এটি প্রথম প্রকাশিত হয়। ১৮৭৩ সালে গিরিশচন্দ্র ঘোষ এই উপন্যাসের একটি নাট্যরূপ দেন এবং দামোদর মুখোপাধ্যায় এই উপন্যাসের একটি উপসংহার উপন্যাস রচনা করেন এবং নামকরণ করেন মৃন্ময়ী (১৮৭৪)। এটি বাংলা সাহিত্যের একটি কাব্যধর্মী উপন্যাস।
১#
যাহা জগদীশ্বরের হাত, তাহা পন্ডিতে বলিতে পারে না।
২#
বাঙ্গালীরা আপন গৃহিনীকে সর্ব্বাপেক্ষা সুন্দরী দেখে।
৩#
তুমি অধম, তাই বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন?
৪#
সাংসারিক ক্লেশের অপ্রতিহত বেগ সকলে সকল সময়ে সহ্য করিতে পারিত না।
৫#
বিপদকালে সঙ্কোচ মূঢ়ের কাজ।
৬#
স্ত্রীলোকের অনেক সাধ।
৭#
যদি জানিতাম যে, স্ত্রীলোকের বিবাহ দাসীত্ব, তবে কদাপী বিবাহ করিতাম না।
৮#
পুরুষে পুরুষে বা স্ত্রীলোকে স্ত্রীলোকে যেরূপ সাক্ষাতের অধিকার, স্ত্রী পুরুষে সাক্ষাতের উভয়েরই সেইরূপ অধিকার উচিত বলিয়া তাহার বোধ ছিল।
৯#
ক্ষেত্রে বীজ রোপিত হইলে আপনিই অঙ্কুর হয়। যখন অঙ্কুর হয়, তখন কেহ জানিতে পারে না- কেহ দেখিতে পায় না। কিন্তু একবার বীজ রোপিত হইলে, রোপণকারী যথায় থাকুক না কেন, ক্রমে অঙ্কুর হইতে বৃক্ষ মস্তক উন্নত করিতে থাকে।
১০#
সমুদ্র দেখিব, বড় সাধ ছিল, সেই জন্যই আসিয়াছি। আহা! কি দেখিলাম! জন্মজন্মান্তরেও ভুলিব না।
১১#
স্ত্রীলোকের গহনা থাকিলে সে না দেখাইলে বাঁচে না।
১২#
বিবাহ-স্ত্রীলোকের একমাত্র ধর্মের সোপান, এই জন্য স্ত্রীকে সহধর্ম্মিনী বলে, জগন্মাতাও শিবের বিবাহিতা।
১৩#
চুল বাঁধিলাম, ভালো কাপড় পরিলাম, খোঁপায় ফুল দিলাম, কাঁকালে চন্দ্রহার পরিলাম, কানে দুল দুলিল; চন্দন, কুকুম, চুয়া; পান, গুয়া, সোনার পুতুলি পর্যন্ত হইল। মনে কর সকলই। তাহা হইলেই বা কি সুখ?
১৪#
আত্মোপকারীকে বনবাসে বিসর্জন করা যাহা দিগের প্রকৃতি, তাহারা চিরকাল আত্মোপকারীকে বনবাস দিবে – কিন্তু যতবার বনবাসিত করুক না কেন পরের কাষ্ঠাহরণ করা যাহার স্বভাব, সে পুনর্বার পরের কাষ্ঠাহরণে যাইবে।
১৫#
মনুষ্যহৃদয় ক্রেষাধিক্য বা সুখাধিক্য একবারে গ্রহণ করিতে পারেনা, ক্রমে ক্রমে গ্রহণ করে।”
১৬#
বাঙ্গালী অবস্থার বশীভূত, অবস্থা বাঙ্গালীর বশীভূত হয় না।
১৭#
পথিক, তুমি পথ হারাইয়াছ?
১৮#
মনুষ্যের চক্ষু কর্ণ যদি সমদূরগামী হইত তবে মনুষ্যের দুঃখস্রোত শমিত কি বর্ধিত হইত তাহা কে বলিবে? সংসার রচনা অপূর্ব কৌশলময়।
১৯#
যখন মনুষ্যহৃদয় কোনো উৎকটভাবে আচ্ছন্ন হয়, চিন্তার একাগ্রতায় বাহ্যসৃষ্টির প্রতি লক্ষ্য থাকে না, তখন অনৈসর্গিক পদার্থও প্রত্যক্ষীভূত বলিয়া বোধ হয়।
২০#
পরশপাথর যেন ছুয়েছি, সোনা হলেম। চুল বাঁধিলাম; ভাল কাপড় পড়িলাম; খোপার ফুল দিলাম; কাঁকালে চন্দ্রহার পরিলাম; কানে দুল দুলিল; বাদন, করুম, চুয়া, পান, গুয়া, সোনার পুত্তলি পর্যন্ত হইল। মনে কর সকলই হইল। তাহা হইলেই বা কি সুখ?